সূরার প্রথমে শব্দটিকেই এর নাম হিসেবে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। নাযিল হওয়ার সময়-কাল নামকরণ এ সুরাটিরও মক্কী জীবনের প্রাথমিক যুগে অবতীর্ণ সূরাসমূহের একটি। এর বিষয়বস্তু থেকে বুঝা যায়,সূরাটি যে সময় নাযিল হয়েছিলো তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরোধিতা শুরু হয়েছিলো ঠিকই কিন্তু তখনো তা তেমন তীব্র হয়ে ওঠেনি। মুসনাদে আহমাদ হাদীস গ্রন্থে হযরত উমর (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেছেনঃ ইসলাম গ্রহণের পূর্বে একদিন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কষ্ট দেয়ার উদ্দেশ্যে আমি বাড়ি থেকে বের হলাম। কিন্তু আমার আগেই তিনি মসজিদে হারামে পৌছে গিয়েছিলেন। আমি সেখানে পৌছে দেখলাম তিনি নামাযে সূরা আল হাক্কাহ পড়ছেন। আমি তাঁর পেছনে দাঁড়িয়ে গেলাম, শুনতে থাকলাম। কুরআনের বাচনভঙ্গি আমাকে বিস্ময়ে অভিভূত করে ফেলেছিলো। সহসা আমার মন বলে উঠলো, লোকটি নিশ্চয়ই কবি হবে। কুরাইশরাও তো তাই বলে। সে মহূর্তেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুখে একথাগুলোর উচ্চারিত হলোঃ “এ একজন সম্মানিত রসূলের বাণী। কোন কবির কাব্য নয়।” আমি মনে মনে বললামঃ কবি না হলে গণক হবেন। তখনই পবিত্র মুখে উচ্চারিত হলোঃ “এ গণকের কথা ও নয়।তোমরা খুব কমই চিন্তা-ভাবনা করে থাকো। একথা তো বিশ্ব- জাহানের রব বা পালনকর্তার পক্ষ থেকে নাযিলকৃত।” এসব কথা শোনার পর ইসলাম আমার মনের গভীরে প্রভাব বিস্তার করে বসলো। হযরত উমরের (রা) এ বর্ণনা থেকে জানা যায়, সূরাটি তাঁর ইসলাম গ্রহণের অনেক আগে নাযিল হয়েছিলো। কারণ এ ঘটনার পর বেশ কিছুকাল পর্যন্ত তিনি ইসলাম গ্রহণ করেননি। তবে বিভিন্ন সময়ের কিছু ঘটনা তাঁকে ক্রমান্বয়ে ইসলামের প্রতি আগ্রহী করে তুলছিলো। অবশেষে তাঁর মনের ওপর চূড়ান্ত আঘাত পড়ে তাঁর আপন বোনের বাড়ীতে। আর এ ঘটনাই তাকে ঈমানের মনযিলে পৌছিয়ে দেয়। (বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কোরআন, সূরা মারয়ামের ভূমিকা; সূরা ওয়াকিয়ার ভুমিকা)