নদ ও নদীর মধ্যে পার্থক্যঃ কোনো জলপ্রবাহের নাম যদি মহিলাবাচক হয় তাহলে তা নদী এবং পুরুষবাচক হলে তা নদ হবে। গঙ্গা, সরস্বতী, যমুনা, পদ্মা, গৌরী, ভাগীরথী, চিত্রা, নর্মদা, কাবেরী, কৃষ্ণা কর্ণফুলী প্রভৃতি মহিলাবাচক নাম, তাই এদেরকে নদী বলা হয়। অপরদিকে কপোতাক্ষ, ব্রহ্মপুত্র, নারদ, ভৈরব, কুমার, মুসা খান, মির্জা মাহমুদ প্রভৃতি পুরুষবাচক নাম, তাই এদেরকে নদ বলা হয়। অনেকে মনে করেন, যে জলস্রোতের নামের শেষে আ-কার কিংবা ই-কার থাকে তাকে নদী বলা হয়। অন্যদিকে যে জলস্রোতের নামের শেষে আ-কার কিংবা ই-কার থাকে না তাদের নদ বলে। যেমন- তুরাগ, কপোতাক্ষ, ব্রহ্মপুত্র, নীল, বালু প্রভৃতি।
উপরের সূত্রগুলোর মধ্যে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য সূত্র হলো নামের শেষে যদি আ-কার, এ-কার, ও-কার, ঔ-কার প্রভৃতি থাকে তবে নিশ্চিতভাবে সে প্রবাহগুলো নদী নামে অভিহিত হবে। নামের শেষে এগুলো না থাকলে এবং শুধু হ্রস্ব উ-কার থাকলে সেটি নদ হবে। যেমন- ‘আড়িয়াল খাঁ’ পুরুষজ্ঞাপক নাম হলেও শেষে আকার রয়েছে। সে জন্য এটি নদ না হয়ে নদী। কিন্তু ‘মুসা খান’ নামের অন্ত-বর্ণ ‘দন্ত্য-ন’-এর পরে কোনো কার নেই, সেজন্য এটি নদ। ‘সিন্ধু’ বানানের শেষে যেহেতু হ্রস্ব উ-কার রয়েছে, সেহেতু এটি নদ। একইভাবে ‘বালু’ একটি নদ। ‘নীল’ স্ত্রী নাম জ্ঞাপক একটি প্রবাহ। যেহেতু এর শেষে কোনো কার নেই, তাই এটি একটি নদ। এভাবে ‘ঘাঘট’ স্ত্রী নাম জ্ঞাপক জলপ্রবাহ হলেও অন্তবর্ণ ‘ট’-এর পরে কোনো কার নেই, তাই এটি নদ।