বার বার গর্ভপাত (মিসক্যারেজ) হওয়া একটি মানসিক এবং শারীরিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত কষ্টদায়ক বিষয়। যদি বার বার গর্ভপাত হয়, তাহলে এর বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, এবং চিকিৎসকের সহায়তা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে কিছু সাধারণ পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে যা গর্ভধারণ এবং গর্ভাবস্থায় সঠিক যত্ন নিতে সাহায্য করবে:
১. চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া:
বার বার গর্ভপাত হলে, প্রথমে একজন অভিজ্ঞ গাইনোকলজিস্ট বা ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কিছু পরীক্ষা যেমন হরমোন টেস্ট, রক্ত পরীক্ষা, আলট্রাসোনোগ্রাফি ইত্যাদি প্রয়োজন হতে পারে।
গর্ভপাতের কারণ নির্ধারণ করার জন্য সাধারণত জিনগত বা গর্ভাশয়ের অস্বাভাবিকতা, হরমোনজনিত সমস্যা, বা শরীরের অন্যান্য মেডিকেল অবস্থা পরীক্ষা করা হয়।
২. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন:
সঠিক খাদ্যাভ্যাস: পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি। প্রোটিন, ফলমূল, শাকসবজি, ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
ভিটামিন ডি এবং ফোলিক অ্যাসিড: ফোলিক অ্যাসিড গর্ভধারণের আগে এবং গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা গর্ভের সঠিক বিকাশে সাহায্য করে।
প্রচুর পানি পান করা এবং সুস্থ থাকতে শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা।
৩. অতিরিক্ত ওজন ও শারীরিক অবস্থা নিয়ন্ত্রণ:
অধিক ওজন বা গাঢ় মোটা হলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়, তাই শরীরের উপযুক্ত ওজন বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
যদি উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে সেগুলি নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত, কারণ এগুলি গর্ভাবস্থায় ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৪. মনস্তাত্ত্বিক চাপ কমানো:
অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ গর্ভাবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। মন শান্ত রাখতে এবং মানসিক চাপ কমানোর জন্য মেডিটেশন, যোগব্যায়াম, হালকা হাঁটা, বা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করা উচিত।
৫. বিষাক্ত পদার্থের থেকে দূরে থাকা:
ধূমপান, অ্যালকোহল বা মাদকদ্রব্যের ব্যবহার গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত ক্ষতিকর। এগুলি গর্ভধারণের জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
৬. পুনরায় গর্ভধারণের জন্য সময় নেওয়া:
একাধিক গর্ভপাতের পর, শরীরের সুস্থতা পুনরুদ্ধার করতে কিছু সময় প্রয়োজন হতে পারে। তাই গর্ভধারণের জন্য কিছু সময় বিরতি নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
৭. গর্ভধারণের পর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা:
গর্ভধারণের পর নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া এবং আলট্রাসোনোগ্রাফি বা অন্যান্য পরীক্ষা করে গর্ভের অবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।
এছাড়া, চিকিৎসক আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে সঠিক পরামর্শ দেবেন, যা আপনার শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা অনুযায়ী উপযুক্ত।