ইউনূস (আ:)এর বংশ সম্পর্কে শুধু এটুকুই জানা যায় যে, তাঁর পিতার নাম ছিল 'মাত্তা'।বুখারী শরীফের একটি হাদীসে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস হতে এ কথা স্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে। বাইবেলে ইউনূস (আ:)এর নাম 'ইউনাহ' এবং তাঁর পিতার নাম 'আমতা' বলা হয়েছে। তবে ইউনূস ইবনে মাত্তাহ এবং ইউনাহ ইবনে আমতার মাঝে ব্যক্তি হিসেবে কোন পার্থক্য নেই। এটা আরবি ও হিব্রু ভাষার উচ্চারণের পার্থক্য।
ইরাকের সুপ্রসিদ্ধ জনপদ 'নীনাওয়া'এর অধিবাসীদের হিদায়াতের জন্য তাঁর আবির্ভাব হয়েছিল। নীনাওয়া আশূরী রাজ্যের রাজধানী এবং মাওসেল এলাকার কেন্দ্রীয় শহর ছিল। কোরআনে এই শহরের জনসংখ্যা এক লক্ষাধিক বলা হয়েছে।
২৮ বছর বয়সে ইউনূস (আ:) নবুয়্যত লাভ করেন এবং নীনাওয়াবাসীদের দাওয়াত দিতে আদিষ্ট হন। দীর্ঘদিন দাওয়াত দেয়ার পরও তারা ইমান না আনায় তিনি ক্রুদ্ধ হয়ে নীনাওয়াবাসীর জন্য গজবের দোয়া করেন এবং ওই শহর ত্যাগ করেন। ফোরাত (ইউফ্রেটিস) নদীর তীরে পৌঁছার পর তিনি নৌকায় আরোহণ করেন। মাঝ নদীতে যাওয়ার পর নৌকা ঝড়ে আক্রান্ত হয়। সে যুগের কুসংস্কার অনুযায়ী নৌকার আরোহীরা মনে করল, নিশ্চয় এই নৌকায় কোন পলাতক দাস আছে। এটা শুনে ইউনূস (আ:) এর চৈতন্যদয় হলো যে, তিনি শহর ছাড়ার ব্যাপারে আল্লাহর অনুমতির অপেক্ষা করেননি। তিনি নিজের দোষ স্বীকার করলেন। নৌকার আরোহীরা তাঁর সততায় মুগ্ধ হলো এবং তাকে নৌকা থেকে ফেলে দিতে সম্মত হলো না। শেষ পর্যন্ত তারা লটারী করল এবং সেখানেও ইউনূস (আ:) এর নামই উঠল। ফলে বাধ্য হয়ে তারা ইউনুস (আ:) কে নদীতে ফেলে দিল। এসময় এক বিরাট মাছ তাকে গিলে ফেলল। কারো কারো মতে, সেটা ছিল তিমি মাছ। তিমির পেটের অন্ধকারের মাঝে তিনি আল্লাহর কাছে কাকুতি মিনতি করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আল্লাহ তার দোয়া কবুল করলেন। ফলে আল্লাহর আদেশে মাছটি তাকেঁ নদীর তীরে এসে উগড়ে দিল। কোরআনের বর্ণনা মতে, দীর্ঘদিন মাছের পেটে থাকার কারণে তিনি অসুস্থ এবং দুর্বল হয়ে পড়েন। তাই আল্লাহ আপন অনুগ্রহে সেখানে লাউগাছ উৎপন্ন করেন। সুস্থ হওয়ার পর তাকেঁ আবার নীনাওয়াবাসীদের কাছেই পাঠানো হয় এবং নীনাওয়াবাসী ইমান আনে।