আর্কিয়া (Archaea) এবং ব্যাকটেরিয়া (Bacteria) হলো দুটি প্রধান প্রোক্যারিওটিক জীবের ডোমেইন। এদের উভয়েরই নিউক্লিয়াস নেই এবং একক-কোষী জীব, কিন্তু এদের মধ্যে গঠন, বৈশিষ্ট্য এবং জীববিজ্ঞানের দিক থেকে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে।
আর্কিয়া এবং ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে প্রধান পার্থক্য:
বৈশিষ্ট্য
|
আর্কিয়া (Archaea)
|
ব্যাকটেরিয়া (Bacteria)
|
১. কোষ প্রাচীর
|
কোষ প্রাচীরে পেপটাইডোগ্লাইকান নেই, বরং পলিস্যাকারাইড বা প্রোটিন থাকে।
|
কোষ প্রাচীরে পেপটাইডোগ্লাইকান (Peptidoglycan) থাকে।
|
২. কোষ ঝিল্লি
|
ইথার-লিঙ্কযুক্ত লিপিড দিয়ে তৈরি।
|
এস্টার-লিঙ্কযুক্ত লিপিড দিয়ে তৈরি।
|
৩. জীবনধারা
|
চরম পরিবেশে (যেমন উষ্ণ প্রস্রবণ, লবণাক্ত জল, অ্যাসিডিক স্থান) বসবাস করতে পারে।
|
মাটিতে, পানিতে, জীবের অভ্যন্তরে বা বাইরে বিস্তৃত পরিবেশে পাওয়া যায়।
|
৪. জিনেটিক উপাদান
|
আর্কিয়ার জিনের অভ্যন্তরীণ কাঠামো ইউক্যারিওটের সাথে অনেকটাই মিলে যায়।
|
জিনের কাঠামো একেবারে প্রোক্যারিওটিক বৈশিষ্ট্যের।
|
৫. রাইবোসোমাল RNA
|
16S rRNA-তে আলাদা সিকোয়েন্স থাকে।
|
16S rRNA-তে ব্যাকটেরিয়া-নির্দিষ্ট সিকোয়েন্স থাকে।
|
৬. প্রজনন পদ্ধতি
|
বাইনারি বিভাজন, বাডিং, বা অন্যান্য সরল পদ্ধতিতে বংশবৃদ্ধি।
|
একইভাবে বাইনারি বিভাজনের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি।
|
৭. মেটাবলিজম
|
মিথেনোজেনেসিসের মতো অনন্য রাসায়নিক প্রক্রিয়া সম্পাদন করতে পারে।
|
মিথেনোজেনেসিস করে না।
|
৮. প্যাথোজেনিসিটি
|
আর্কিয়ার কোনো প্যাথোজেনিক প্রজাতি এখনও পাওয়া যায়নি।
|
অনেক ব্যাকটেরিয়া প্যাথোজেনিক এবং বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করে।
|
৯. RNA পলিমারেজ
|
RNA পলিমারেজ অনেকটা ইউক্যারিওটিক এনজাইমের মতো।
|
RNA পলিমারেজ ব্যাকটেরিয়ার নিজস্ব প্রকারের।
|
১০. পরিবেশে ভূমিকা
|
চরম পরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেমন মিথেন উৎপাদন।
|
পরিবেশে পুষ্টি চক্র (যেমন নাইট্রোজেন, কার্বন চক্র) বজায় রাখে।
|
সাধারণ বৈশিষ্ট্য:
-
উভয়ই প্রোক্যারিওটিক কোষ, অর্থাৎ নিউক্লিয়াস নেই।
-
অঙ্গাণুর অভাব।
-
DNA একটি বৃত্তাকার ক্রোমোজোমে উপস্থিত।
-
বাইনারি বিভাজনের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে।
উপসংহার:
আর্কিয়া এবং ব্যাকটেরিয়া দেখতে একই রকম মনে হতে পারে, কিন্তু তাদের গঠনগত এবং জৈব রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। আর্কিয়া সাধারণত চরম পরিবেশে টিকে থাকতে পারে, যেখানে ব্যাকটেরিয়া অনেক বেশি বৈচিত্র্যময় পরিবেশে পাওয়া যায় এবং কিছু ব্যাকটেরিয়া প্যাথোজেনিক হতে পারে।