যদি আপনি আলোর চেয়ে দ্রুতগতিতে ভ্রমণ করতে পারেন, তাহলে আপনি এমন কিছু দেখবেন যা আমাদের বর্তমান জ্ঞান অনুযায়ী সাধারণত সম্ভব নয়। আলোর চেয়ে দ্রুতগতি বা পারমাণবিক তড়িৎ গতিতে (superluminal speed) ভ্রমণের ফলে কিছু অভূতপূর্ব প্রভাব সৃষ্টি হবে। এখানে কিছু কল্পনা করা যায়:
1. যাত্রার সময় এবং স্থান রূপান্তর:
আলোর চেয়ে দ্রুত চললে, আপনি সময় এবং স্থানকে এমনভাবে অনুভব করবেন যা আমাদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতার বাইরে। বিশেষ করে, আপনি যদি সময়ের দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবেন, তখন আপনার চারপাশের ঘটনা অদ্ভুতভাবে পাল্টে যেতে পারে, কারণ আপনি সময়ের বিরুদ্ধে চলছেন। একে "টাইম ট্রাভেল" বলা যেতে পারে।
তথ্য দৌড়ানো: আপনি যেখান থেকে যাত্রা শুরু করবেন, সেখানে পৌঁছানোর পর আপনি কিছু ঘটনা পূর্বেই দেখতে পাবেন, যা আপনি স্থান পরিবর্তন করার আগে ঘটতে শুরু করেছে, যেমন একটি সময়-পেছনে গমন।
2. সাপেক্ষতা এবং দৃশ্য পরিবর্তন:
আলোর গতির কাছাকাছি পৌঁছানোর সময়, আপনি বিশেষভাবে দেখতে পাবেন আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য পাল্টে যাচ্ছে। এমনকি, আপনি যদি দ্রুতগতিতে চলে যান, আপনি যেখানে পৌঁছাচ্ছেন তার দৃশ্য প্রায় "অলীক" হয়ে উঠবে। এর অর্থ হল, আকাশের রঙ, বা পৃথিবী ও অন্যান্য বস্তু অস্বাভাবিক আকারে দেখা যেতে পারে।
3. তথ্যের পরিবর্তিত চরিত্র:
আলোর চেয়ে দ্রুত চলতে গেলে, আপনি কোনো ঘটনা দেখতে পেতে পারেন যা বাস্তবে হওয়ার আগেই দৃশ্যমান হবে। এটি "চরম গতি" তত্ত্বের পরিপন্থী, এবং বর্তমান পদার্থবিদ্যার আইন অনুযায়ী, এমন কিছু দেখা সম্ভব নয়।
4. বিগ ব্যাং এবং মহাবিশ্বের গঠন:
আপনি যদি মহাবিশ্বে ভ্রমণ করেন, তখন আপনি বর্তমান বা অতীতের ঘটনাগুলোও দেখতে পাবেন, এমনকি আপনি বিগ ব্যাং-এর মতো মহাবিশ্বের সৃষ্টির মুহূর্তগুলোও পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। আপনার চোখের সামনে সৃষ্টির প্রাথমিক অবস্থাগুলো ঘটতে দেখার অভিজ্ঞতা হবে।
5. কাল্পনিক অবস্থা:
কিছু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন, আলোর চেয়ে দ্রুতগতিতে চললে আপনি কল্পনার মতো যেকোনো অবস্থায় যেতে পারবেন, যেখানে আপনি মহাকাশের বিকৃতিকে অনুভব করতে পারবেন, অর্থাৎ স্থান ও সময় পুরোপুরি ভেঙে গিয়ে অন্য একটি রিয়ালিটি তৈরি হবে।
তবে বাস্তবে, আলোর চেয়ে দ্রুত ভ্রমণ করা বর্তমান পদার্থবিজ্ঞানের জন্য অসম্ভব, কারণ এটি আপেক্ষিকতার তত্ত্ব (Theory of Relativity)-এর সাথে সাংঘর্ষিক। আলোর গতি অতিক্রম করলে আপনি সাধারণত দেখতে পাবেন এমন কোনো বাস্তব পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই, তাই এটি কেবলমাত্র কল্পনা ও বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ।