47 বার দেখা হয়েছে
"কুরআন ও হাদিস" বিভাগে করেছেন

1 টি উত্তর

0 জনের পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন
ইসলামে সুদ (যাকে আরবি ভাষায় রিবা বলা হয়) কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর কারণ হল, সুদ মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক শোষণ, বৈষম্য এবং নৈতিক অবক্ষয় সৃষ্টি করে। ইসলামে সুদের নিষেধাজ্ঞা মূলত সামাজিক ন্যায়বিচার, সমতা, এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য। নিচে সুদ নিষিদ্ধ করার কারণগুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:

---

১. অর্থনৈতিক শোষণ রোধ:

সুদের মাধ্যমে ঋণদাতা কোনো পরিশ্রম ছাড়াই লাভ অর্জন করে, আর ঋণগ্রহীতা ক্ষতির শিকার হয়।

এটি দরিদ্রদের শোষণ করে এবং ধনীকে আরও ধনী করে তোলে।

অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং সামাজিক বৈষম্য বৃদ্ধি পায়।

---

২. নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয়:

সুদভিত্তিক লেনদেন মানুষের লোভ বৃদ্ধি করে এবং সহমর্মিতার নীতি নষ্ট করে।

এটি দাতব্য কাজ এবং আর্থিক সহায়তার চেতনা দূর করে।

---

৩. ব্যবসায়িক ঝুঁকির অভাব:

সুদভিত্তিক ব্যবস্থায় ঋণদাতা কোনো ঝুঁকি নেয় না, অথচ মুনাফা দাবি করে।

ইসলাম ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বে ঝুঁকি এবং লাভ-ক্ষতি উভয়কে ভাগ করার উপর জোর দেয়।

---

৪. অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা:

সুদ অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি এবং আর্থিক সংকট সৃষ্টি করে।

এটি সঞ্চয়কে উৎসাহিত না করে সম্পদের অসম বন্টন ঘটায়।

সুদমুক্ত অর্থনীতি একটি স্থিতিশীল অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

---

৫. কুরআন ও হাদিসে সুদ নিষিদ্ধ:

কুরআনের নির্দেশনা:

1. আল-বাকারা (২:২৭৫):

> "যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতের দিন এমনভাবে উঠবে, যেন শয়তান তাদেরকে পাগল বানিয়ে ফেলেছে।"

2. আল-বাকারা (২:২৭৮-২৭৯):

> "হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাকো তবে সুদের বাকি অংশ ছেড়ে দাও। আর যদি না ছাড়ো, তবে আল্লাহ ও তার রাসুলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা জেনে নাও।"

হাদিসের নির্দেশনা:

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:

> "সুদ গ্রহণকারী, প্রদানকারী, এর সাক্ষী এবং যিনি তা লিপিবদ্ধ করেন, এরা সবাই সমান অপরাধী।" (মুসলিম, ১৫৯৮)

---

৬. সুদের বিকল্প ইসলামি ব্যবস্থা:

মুদারাবা (লাভ-ক্ষতির ভিত্তিতে অংশীদারিত্ব): বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ীর মধ্যে চুক্তি।

মুশারাকা (অংশীদারিত্ব): যেখানে দুপক্ষ লাভ-ক্ষতি ভাগ করে।

যাকাত ও দান: দরিদ্রদের সহায়তা করার জন্য ইসলামে যাকাত ও দানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

---

উপসংহার:

ইসলামে সুদ নিষিদ্ধ করার পেছনে মূল কারণ হলো সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, শোষণ থেকে মানুষকে রক্ষা করা, এবং একটি নৈতিক ও স্থিতিশীল অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা। সুদমুক্ত অর্থনীতির মাধ্যমে ইসলাম একটি মানবিক, সহানুভূতিশীল, এবং টেকসই অর্থনৈতিক কাঠামোর দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।

এরকম আরও কিছু প্রশ্ন

0 টি উত্তর
0 টি উত্তর
0 টি উত্তর

36,214 টি প্রশ্ন

35,393 টি উত্তর

1,740 টি মন্তব্য

3,774 জন সদস্য

Ask Answers সাইটে আপনাকে সুস্বাগতম! এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে পারবেন ৷ আর অনলাইনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে পারবেন ৷
9 জন অনলাইনে আছেন
0 জন সদস্য, 9 জন অতিথি
আজকে ভিজিট : 1035
গতকাল ভিজিট : 33734
সর্বমোট ভিজিট : 52445207
এখানে প্রকাশিত সকল প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোন প্রকার আইনি সমস্যা Ask Answers কর্তৃপক্ষ বহন করবে না৷
...