অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করার ভয়াবহ পরিনতিঃ
*2:188 সূরা আল বাকারাহ*
وَلَا تَأْكُلُوٓا أَمْوٰلَكُم بَيْنَكُم بِالْبٰطِلِ وَتُدْلُوا بِهَآ إِلَى الْحُكَّامِ لِتَأْكُلُوا فَرِيقًا مِّنْ أَمْوٰلِ النَّاسِ بِالْإِثْمِ وَأَنتُمْ تَعْلَمُونَ
আর তোমরা নিজদের মধ্যে তোমাদের সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না এবং তা বিচারকদেরকে (ঘুষ হিসেবে) প্রদান করো না। যাতে মানুষের সম্পদের কোন অংশ পাপের মাধ্যমে জেনে বুঝে খেয়ে ফেলতে পার।
আর তোমরা অন্যায় ভাবে পরস্পরের মাল গ্রাস করো না এবং জানা সত্ত্বেও অসৎ উপায়ে লোকের মাল গ্রাস করার উদ্দেশে তা বিচারকের নিকট নিয়ে যেয়ো না।
১৮৮ নং আয়াতের তাফসীর:
অত্র আয়াতে মানুষের সম্পদে স্বতন্ত্র অধিকার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। একজন মানুষ অন্যায়ভাবে যেমন মিথ্যা শপথ, ডাকাতি, চুরি, ঘুষ নিয়ে ও সুদ খেয়ে অন্যের সম্পদ হরণ করবে তা হারাম।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিদায় হজ্জে বলেন, একজন মুসলিমের জন্য অন্য মুসলিমের মান-সম্মান, রক্ত, সম্পদ সব কিছু হারাম। (সহীহ বুখারী হা: ৬৮, সহীহ মুসলিম হা:১৬৭৯)
হাফেয ইবনে কাসীর (রহঃ) বলেন: এখানে ঐ সব ব্যক্তিদের আলোচনা করা হচ্ছে, যাদের কাছে অপরের কোন প্রাপ্য থাকে কিন্তু প্রাপকের নিকট তার প্রাপ্য অধিকারের কোন প্রমাণ থাকে না, ফলে এ দুবর্লতার সুযোগ গ্রহণ করে সে আদালতের আশ্রয় নিয়ে বিচারকের মাধ্যমে নিজের পক্ষে ফায়সালা করিয়ে নেয় এবং এভাবে সে প্রাপকের অধিকার হরণ করে। এটা জুলুম ও হারাম। আদালতের ফায়সালা জুলুম ও হারামকে বৈধ ও হালাল করে দিতে পারে না। আদালত কেবল বাহ্যিক দিক অবলোকন করে বিচার করে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি একজন মানুষ। লোকজন আমার নিকট বিবাদ নিয়ে উপস্থিত হয়ে থাকে। স্বভাবত একজন অপরজন অপেক্ষা বেশি যুক্তিতর্কে পারদর্শী হয়ে থাকে। তার যুক্তিপূর্ণ কথা শুনে আমি হয়তো তারই পক্ষে ফায়সালা দিয়ে থাকি (অথচ প্রকৃত ঘটনা এর বিপরীত)। তবে জেনে রেখ: যে ব্যক্তির পক্ষে এরূপ ফায়সালা দেয়ার ফলে কোন মুসলিমের হক আমি তাকে দিয়ে দেই, ওটা হবে তার জন্য জাহান্নামের আগুনের টুকরা। অতএব সেটা সে গ্রহণ করবে বা ছেড়ে দেবে। (সহীহ বুখারী হা: ২৬৮০)
কাতাদাহ (রহঃ) বলেন: হে আদম সন্তান! জেনে রেখ, বিচারকের মীমাংসা তোমার জন্য হারামকে হালাল এবং অন্যায়কে ন্যায় করে দিতে পারে না। বিচারক সাক্ষীদের সাক্ষ্য অনুসারে বাহ্যিক অবস্থা দেখে বিচার করে। তাছাড়া তিনি মানুষ, তার দ্বারা ভুল হওয়াও সম্ভব। (তাফসীর ইবনে কাসীর, অত্র আয়তের তাফসীর)
অতএব এরূপ ধোঁকাবাজী ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে অন্যের সম্পদ ভোগ করলে এর বিনিময়ে তাকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে।