211 বার দেখা হয়েছে
"তথ্য ও প্রযুক্তি" বিভাগে করেছেন

1 টি উত্তর

0 জনের পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন
সৃষ্টিশীল মানুষ দু’ধরণের সম্পদ নিয়ে শিক্ষিত জীবন যাপন করে; প্রথমত বস্তুগত সম্পদ-জায়গাজমি, গাড়ি-বাড়ি, টাকা পয়সা, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প কারখানা ইত্যাদি ও নানারকম প্রাত্যহিক ব্যবহার্য দ্রব্যাদি এবং দ্বিতীয়ত মেধাসম্পদ বা Intellectual Property এর আওতায় আছে- সাহিত্যকর্ম, নাট্যকর্ম, শিল্পকর্ম, সঙ্গীতকর্ম, অডিও-ভিডিওকর্ম, চলচ্চিত্রকর্ম, ফটোগ্রাফি, ভাস্কর্যকর্ম, সস্প্রচারকর্ম ইত্যাদি।মানুষের বস্তুগত সম্পদ যেমন মালিক বৈ অন্য কেউ প্রকৃত মালিকের অনুমতি বা মূল্য পরিশোধ ছাড়া ভোগ বা ব্যবহার করতে পারে না, মেধা সম্পদের রক্ষায় সারা পৃথিবীর মানুষ ও আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ যতটা সচেতন ও কর্তব্য পরায়ন, মেধাসম্পদ রক্ষার ক্ষেত্রে ঠিক যেন তার বিপরীত, বিশেষ করে এশীয় প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলোতে। মেধাসম্পদের রক্ষা এর ব্যবস্থাপনার সঙ্গে নিবিড়ভাবে যে শব্দটি সংশ্লিষ্ট তা হচ্ছে বা Copyright কর্মের অধিকার। ইংরেজী Copyright শব্দটির মধ্যেই এর অন্তনির্হিত অর্থটি লুকিয়ে আছে। আমরা যদি Copyright ও Right এভাবে শব্দটি বিশ্লিষ্ট করে অর্থ বিশ্লেষণ করি তাহলে এর অর্থ দাঁড়ায় Copy করার অধিকার। অর্থাৎ সকল ধরণের সৃষ্টিশীল কর্মই (যা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে) কর্মের স্রষ্টা বা রচয়িতার অনুমতি ছাড়া কপি করা বা পুনরুৎপাদন করা, অনুবাদ করা, উপযোগী করা, রুপান্তর করা বা অভিযোজন করা, তা বাণিজ্যিক বা ব্যক্তিগত, যে পর্যায়েই হোক না কেন, তা কপিরাইট ধারণা, আন্তর্জাতিক আইন, আন্তর্জাতিক চুক্তি, দেশিয় আইন, নৈতিকতা ও ইতিবাচকবোধের চরম পরিপন্থী।কপিরাইট সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড সবসময় একাধিক পক্ষ সংশ্লিষ্ট। সাহিত্যের ক্ষেত্রে প্রধানত লেখক, প্রকাশক ও পাঠক, সঙ্গীতের ক্ষেত্রে গীতিকার, সুরকার, গায়ক, যন্ত্রী ও সঙ্গীতকর্মের প্রকাশক বা উৎপাদক, চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে কাহিনীকার, স্ক্রিপ্ট রাইটার, প্রযোজক, পরিচালক, অভিনেতা-অভিনেত্রী, গায়ক, সহশিল্পীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এমনিভাবে সৃষ্টিশীল প্রতিটি কর্মপরিসরে অসংখ্য মানুষ সম্পৃক্ত থাকেন। যন্ত্র ও প্রযুক্তির যত উৎকর্ষ হচ্ছে, বিশেষ করে কম্পিউটার-ডিজিটাল বিশ্বে এ যুগে কার সৃষ্টিকর্ম কিভাবে চৌর্যবৃত্তির ফাঁদে পড়ে যাচ্ছে তা সবসময় ঠিকভাবে অনুসরণ করাও সম্ভব না। বিশেষ করে বর্তমান ইন্টারনেট যুগে ঘরে বসেই আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কর্মের উপাদান বা উৎস হাতে পেয়ে যাচ্ছি। অথচ অনেক ক্ষেত্রেই সেই সৃষ্টিশীল কর্মের রচয়িতাই বঞ্চিত হচ্ছে তার যথাযথ Royalty থেকে। কেবল জীবিত রচয়িতাই নন, সারা পৃথিবীতেই জীবিত রচয়িতা এবং তার মৃত্যুর পর সেই রচয়িতার বৈধ উত্তরাধিকারগণের দেশভেদে পঞ্চাশ থেকে সত্তর বছর ধরে সৃষ্টিকর্মের রয়্যালটি পেয়ে থাকার কথা। বাংলাদেশি আইনে একজন রচয়িতার মৃত্যূর পর ষাট বছর পর্যন্ত এই অধিকার বলবৎ থাকে।বাংলাদেশের প্রায় সকল শিক্ষিত মানুষই একটি শব্দের সঙ্গে বহুল পরিচিত। এটি ইংরেজী শব্দ Piracy যার আভিধানিক অর্থ ‘গ্রন্থাদির স্বত্ত লঙ্ঘন’। কিন্তু বর্তমান বিশ্বের অর্থমান বহুগুণ সম্প্রসারিত। ফলে, এখন পাইরেসি কেবল গ্রন্থস্বত্ত লঙ্ঘনকেই বোঝায় না, যেকোন অনুমোদনবিহীন সৃষ্টিকর্মের উৎপাদনই পাইরেসি। বলতে দ্বিধা নেই, গ্রন্থ (বিশেষ করে বিদেশী), দেশি-বিদেশি চলচ্চিত্র, সঙ্গীত ও কম্পিউটার সফটওয়্যার ইত্যাদি সবগুলো বাজারের প্রায় পুরোটাই পাইরেসিকারদের দৃশ্য ও অদৃশ্য কালো জালে বন্দি। অনেক শিক্ষিত মানুষও তাদের সন্তানদের হাতে তুলে দিচ্ছেন পাইরেটেড বই। অথচ রঙিন বিদেশী বই এর জায়গায় পাইরেটেড কপি পড়ে আমাদের প্রকৌশল ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা বারংবার প্রতারিত হচ্ছে, বঞ্চিত হচ্ছে Global Knowledge থেকে; পিছিয়ে পড়ছে প্রকৃত জ্ঞান অর্জনের প্রতিযোগীয়। পাইরেসির কারণে কর্মের রচয়িতা বঞ্চিত হচ্ছেন রয়্যালটি থেকে, পাঠক বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত জ্ঞান থেকে আর সরকার হারাচ্ছে তার রাজশ্ব।বাংলাদেশ World Intellectual Property Organization (WIPO) এর সদস্যভূক্ত দেশ হিসেবে WIPO পরিচালিত বার্ন কনভেনশন, UNESCO পরিচালিত ইউনিভার্সেল কপিরাইট কনভেনশন (UCC) এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (WTO) সদস্য হওয়ার কারণে এতদসংক্রান্ত, TRIPS (Trade Related Aspects of Intellectual Property Rights) চুক্তিসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য চুক্তি কনভেনশনের কপিরাইট সংক্রান্ত সকল শর্ত মেনে চলতে বাধ্য। সারা বিশ্বে আধুনিক প্রযুক্তি উন্নয়নের সাথে সাথে কপিরাইট ব্যবস্থাপনারও যুগান্তকারী পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। এ কারণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কপিরাইটের গুরুত্ব অনুধাবণ করে আন্তর্জাতিক কপিরাইট আইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশের কপিরাইট আইন ২০০০ প্রণয়ন করা হয় এবং এ আইনটির যুগোপযুগী করণের লক্ষে ২০০৫ সালে সংশোধন করা হয়। আইনের যথাযথ প্রয়োগসহ কপিরাইট আইনের ১০৩ ধারার বিধানমতে কপিরাইট রুলস ২০০৬ (এসআর ও নং ২১৯-আইন/২০০৬) প্রণয়ন করা হয়।দুইকপিরাইট আইন ২০০০ (২০০৫ সালে সংশোধিত) এ সর্বমোট ১৭ টি অধ্যায় এবং ১০৫টি ধারা বিদ্যমান। এতে কপিরাইট লঙ্ঘনজনিত অপরাধ, অপরাধের প্রকৃত এবং তার বিপরীতে শাস্তির বিধানাবলী বর্ণনা করা হয়েছে, যা সংক্ষেপে নিম্নরূপ:১. কপিরাইটের মেয়াদ: ফটোগ্রাফ ব্যতীত অন্যান্য কর্মের ক্ষেত্রে কপিরাইট প্রণেতার মৃত্যুর পর ৬০ বছর (ধারা-২৪)। ফটোগ্রাফের মেয়াদ ৬০ বছর (ধারা-২৪)২. আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মের কপিরাইটের মেয়াদ: ৬০ বছর (ধারা-৩২)।৩. সম্প্রচার পুনরুৎপাদনের অধিকার: এরূপ কর্মের মেয়াদ সম্প্রচারের পরবর্তী বছরের শুরু থেকে ২৫ বছর (ধারা-৩৩)৪. কপিরাইট সমিতির নিবন্ধন: কপিরাইট আইন ২০০০-এর ৪১ ধারার বিধান মতে কপিরাইট সমিতি গঠন ও নিবন্ধন করা যাবে। নির্ধারিত ফরমে সমিতি নিবন্ধনের জন্যরেজিস্ট্রারের নিকট আবেদন করতে হবে। রেজিস্ট্রার উক্ত দরখাস্ত সরকারের নিকট দাখিল করবেন। প্রণেতা এবং এ আইনের অধীন অন্যান্য অধিকারের মালিকদের স্বার্থ, জনস্বার্থ ও জনগণের সুবিধা, বিশেষত লাইসেন্স প্রার্থী হতে পারে এমন ব্যক্তিসমষ্টির স্বার্থ ও সুবিধা, দরখাস্তকারীর যোগ্যতা এবং পেশাগত দক্ষতা বিবেচনা করে সরকার নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে কোন সমিতিকে কপিরাইট সমিতিরূপে নিবন্ধিত করবে। একই শ্রেণীর কর্মের ব্যবসা করার জন্য একের অধিক সমিতিকে নিবন্ধন করা যাবে না।৫. অনুবাদ কর্মের লাইসেন্স: কপিরাইট আইনের ৫২ ধারার বিধানমতে কপিরাইট বোর্ডের অনুমোদনক্রমে কপিরাইট অফিস থেকে অনুবাদ কর্মের লাইসেন্স ইস্যু করা হয়।৬. কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন: কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনের জন্য সরকার নির্ধারিত ফি এর ট্রেজারি চালান, কর্মের ২ কপি নমুনাসহ নির্ধারিত ফরমে রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটের নিকট আবেদন করতে হয় (ধারা-৫৫)।৭. আন্তর্জাতিক কপিরাইট: কপিরাইট আইনে ৬৮-৭০ ধারায় আন্তজার্তিক কপিরাইট সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে।

এরকম আরও কিছু প্রশ্ন

1 টি উত্তর
9 এপ্রিল, 2021 "তথ্য ও প্রযুক্তি" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Md.Suny
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
23 ডিসেম্বর, 2020 "তথ্য ও প্রযুক্তি" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Bodrul Alom
1 টি উত্তর
26 এপ্রিল, 2021 "জীব বিজ্ঞান" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Md.Suny
0 টি উত্তর
14 জুলাই, 2021 "অনলাইন আয়" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Md.Suny
2 টি উত্তর
11 এপ্রিল, 2021 "পদার্থবিদ্যা" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Md.Suny
1 টি উত্তর
1 টি উত্তর

34,058 টি প্রশ্ন

33,008 টি উত্তর

1,579 টি মন্তব্য

3,214 জন সদস্য

Ask Answers সাইটে আপনাকে সুস্বাগতম! এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে পারবেন ৷ আর অনলাইনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে পারবেন ৷
11 জন অনলাইনে আছেন
0 জন সদস্য, 11 জন অতিথি
আজকে ভিজিট : 14128
গতকাল ভিজিট : 28812
সর্বমোট ভিজিট : 42851993
  1. Tuhin_Islam

    50 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  2. Sijan855

    1 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    1 টি গ্রশ্ন

এখানে প্রকাশিত সকল প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোন প্রকার আইনি সমস্যা Ask Answers কর্তৃপক্ষ বহন করবে না৷
আজ বঙ্গাব্দ৷
...