194 বার দেখা হয়েছে
"কুরআন ও হাদিস" বিভাগে করেছেন

1 টি উত্তর

0 জনের পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন
 ১. সর্বাবস্থায় অশ্লীল কথা, অশালীন কথা, গালিগালাজ ও কটুক্তি বর্জন করা। বিভিন্ন হাদিসে বারংবার বলা হয়েছে,

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অশালীন, অশ্লীল, অশোভনীয় কথা বলতেন না, গালি দিতেন না,কটুক্তি করতেন না। “(বুখারি, মুসলিম ও অন্যান্য)।

 ২. বেশি কথা বলা, দম্ভভরে বা চিবিয়ে কথা বলা, অহঙ্কার করা, বিতর্ক করা, মিথ্যা কথা বলা ইত্যাদি পরিহার করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

“তোমাদের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় এবং কিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী অবস্থানের অধিকারী হবে তারা যারা তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম আচরণের অধিকারী। আর তোমাদের মধ্যে আমার নিকট সবচেয়ে বেশি ঘৃণিত এবং কিয়ামতের দিন আমার থেকে সবচেয়ে দূরে অবস্থান করবে তারা যারা বেশি কথা বলে, যারা কথা বলে জিতে যেতে চায়, বাজে কথা বলে এবং যারা অহঙ্কার করে।” (তিরমিজি, হাদিসটি হাসান।)

অন্য হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

“নিজের মতটি হক হওয়া সত্ত্বেও যে ব্যক্তি বিতর্ক পরিত্যাগ করল আমি তার জন্য জান্নাতের পাদদেশে একটি বাড়ির জিম্মাদারী গ্রহণ করলাম। আর যে ব্যক্তি হাসি-মশকারার জন্যও মিথ্যা বলে না আমি তার জন্য জান্নাতের মধ্যবর্তী স্থানে একটি বাড়ির জিম্মাদারী গ্রহণ করলাম। আর যার আচরণ-ব্যবহার সুন্দর আমি তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে একটি বাড়ির জিম্মাদারী গ্রহণ করলাম।” (আবু দাউদ,হাসান, সহীহুল জামে।)

 ৩. সকলের সাথে আনন্দিত চিত্তে, হাসিমুখে কথা বলা এবং কথার সময় পরিপূর্ণ মনোযোগ ও আগ্রহ সহকারে তার কথা শোনা। যেন তার প্রতি ভালবাসা ও আন্তরিকতা পূর্ণভাবে ফুটে উঠে। আমর ইবনুল আস রা. বলেন:

“রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমাজের নিকৃষ্টতম ব্যক্তির সাথেও পরিপূর্ণ মনোযোগ দিয়ে তার দিকে পূর্ণ মুখ ফিরিয়ে কথা বলতেন। এভাবে তিনি তার হৃদয় জয় করে নিতেন। তিনি আমার সাথেও কথা বলতেন পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে এবং আমার দিকে পূর্ণরূপে মুখ ফিরিয়ে। এমনকি আমার মনে হতো যেন আমিই সমাজের শ্রেষ্ঠ মানুষ।” (তাবরানি, হাসান।)

এখানে উল্লেখ্য যে, মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা, শ্রদ্ধাবোধ এবং অহংকারহীন হৃদয় না হলে এগুণ পুরোপুরি অর্জন করা যায় না।

উত্তম আচরণ শুধু দাওয়াতের সফলতার চাবিকাঠিই নয়, উপরন্তু আখেরাতের সফলতার সর্বোত্তম উপায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

“কিয়ামতের দাড়িপাল্লায় উত্তম আচরণের চেয়ে বেশি ভারি কোনো আমল আর রাখা হবে না। আর উত্তম আচরণের অধিকারী ব্যক্তি এ আচরণের দ্বারাই তাহাজ্জুদ ও নফল রোযা পালনকারীর মর্যাদা অর্জন করবে।” (তিরমিজি, আহমদ, আবু দাউদ, হদিসের সূত্র সহীহ, সহীহুল জামে।)

সবর বা ধৈর্য

উপর্যুক্ত গুণগুলি অর্জন করতে ধৈর্যের অনুশীলন করতে হবে। পূর্বোল্লিখিত একটি আয়াতে আমরা দেখেছি যে, উৎকৃষ্ট দিয়ে মন্দ প্রতিহত করার গুণ শুধু ধৈর্যশীলগণই অর্জন করতে পারেন এবং তারাই মহা সৌভাগ্যবান। দাওয়াত ও ধৈর্য অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। আল্লাহ তায়ালা বলেন:

“সালাত কায়েম কর, সৎকার্যে আদেশ কর, অসৎকার্যে নিষেধ কর এবং তোমার উপর যা নিপতিত হয় তাতে ধৈর্য ধারণ কর। নিশ্চয় এগুলিই দৃঢ়সংকল্পের কাজ।”(সূরা লুকমান : ১৭)

সূরা আলে ইমরানের ১৮৬ আয়াত এবং সূরা আল-আসরেও অনুরূপ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ধৈর্যের মূল পরিচয় হল রাগের সময়। আল্লাহর পথে ডাকতে বা ভাল কাজের আদেশ ও খারাপ কাজের নিষেধ করতে গেলেই অনেক মানুষের নিকট থেকে বিরূপ কথা, গালমন্দ, নিন্দা ইত্যাদি শুনতে হবে এবং এতে কখনো প্রচণ্ড রাগ হবে এবং কখনো মন দু:খভরাক্রান্ত হবে। উভয় ক্ষেত্রেই আমাদেরকে ধৈর্যের মাধ্যমে এর মুকাবিলা করতে হবে এবং উৎকৃষ্ট দিয়ে মন্দ প্রতিহত করতে হবে। কোরআন কারীমে বারংবার মুমিনদেরকে ধৈর্য অবলম্বন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্রোধের সময় ধৈর্য ধারণ করা এবং ক্রোধ সংবরণ করাকে মুমিনদের মৌলিক পরিচয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহর পথে টিকে থাকার জন্য ধৈর্য ও সালাতের সাহায্য গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কাফিরদের নিন্দামন্দ, মিথ্যা-অপবাদ, বিরূপ কথা ও ষড়যন্ত্রের মুকাবিলায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ধৈর্য ধারণের নির্দেশ দিয়ে সূরা নাহলের ১২৭-১২৮ আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন:

“ধৈর্য ধারণ কর, আর তোমার ধৈর্য তো আল্লাহর সাহায্য ছাড়া হবে না। আর তাদের দরুন দু:খ করবে না এবং তাদের ষড়যন্ত্রে মন:ক্ষুন্ন হবে না। আল্লাহ তাদের সঙ্গে আছেন যারা তাকওয়া অবলম্বন করেন এবং যারা সৎকর্ম পরায়ণ।” ( সূরা নাহল : ১২৭-১২৮)

সালাত, তাসবিহ ও ইবাদত

ধৈর্য অর্জনের অত্যন্ত বড় অবলম্বন হলো সালাত ও দোয়া। কোরআনুল কারীমে একাধিক স্থানে ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে শক্তি অর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূরা হিজর-এর ৯৭-৯৯ আয়াতে আল্লাহ বলেন:

“আমি তো জানি, তারা যা বলে তাতে তোমার অন্তর সংকুচিত হয়। সুতরাং তোমার প্রতিপলকের তাসবিহ-তাহমিদ বা প্রশংসাময় পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর এবং সাজদাকারীদের অন্তর্ভুক্ত হও এবং একিন (মৃত্যু) আসা পর্যন্ত তুমি তোমার প্রতিপালকের ইবাদত কর।” (সূরা হিজর : ৯৭-৯৯)

আল্লাহর পথে ডাকতে গেলে বা সৎকার্যে আদেশ ও অসৎকার্যে নিষেধ করতে গেলে মানুষের বিরোধিতা, শত্রুতা ও নিন্দার কারণে কখনো ক্রোধে, কখনো বা বেদনায় অন্তর সঙ্কীর্ণ হয়ে যায়। এ মনোকষ্ট দূর করার প্রকৃত ধৈর্য ও মানুষিক স্থিতি অর্জন করার উপায় হলো বেশি বেশি আল্লাহর জিকর, ক্রন্দন ও প্রার্থনা করা।

এরকম আরও কিছু প্রশ্ন

1 টি উত্তর
1 টি উত্তর
22 ডিসেম্বর, 2021 "কুরআন ও হাদিস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন অজ্ঞাতকুলশীল
1 টি উত্তর
22 ডিসেম্বর, 2021 "কুরআন ও হাদিস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন অজ্ঞাতকুলশীল
1 টি উত্তর
22 ডিসেম্বর, 2021 "কুরআন ও হাদিস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন অজ্ঞাতকুলশীল
1 টি উত্তর
22 ডিসেম্বর, 2021 "কুরআন ও হাদিস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন অজ্ঞাতকুলশীল
2 টি উত্তর
7 সেপ্টেম্বর, 2020 "কুরআন ও হাদিস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Khorshed
1 টি উত্তর
2 টি উত্তর

34,074 টি প্রশ্ন

33,019 টি উত্তর

1,584 টি মন্তব্য

3,230 জন সদস্য

Ask Answers সাইটে আপনাকে সুস্বাগতম! এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে পারবেন ৷ আর অনলাইনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে পারবেন ৷
16 জন অনলাইনে আছেন
0 জন সদস্য, 16 জন অতিথি
আজকে ভিজিট : 26844
গতকাল ভিজিট : 32700
সর্বমোট ভিজিট : 43341858
  1. Lima24

    55 পয়েন্ট

    1 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  2. Towhid-khan

    55 পয়েন্ট

    1 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  3. Sagorroy

    50 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  4. Raserul

    50 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  5. amzadtopu

    50 পয়েন্ট

    0 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

এখানে প্রকাশিত সকল প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোন প্রকার আইনি সমস্যা Ask Answers কর্তৃপক্ষ বহন করবে না৷
আজ বঙ্গাব্দ৷
...