বর্ণিত আছে যে, হযরত সুলাইমান (আ.) যখন পিঁপড়ার কথা-
لَا يَحْطِمَنَّكُمْ سُلَيْمَانُ وَجُنُوْدُه (সুলাইমান এবং তাঁর সৈন্যদল যেন তোমাদেরকে পিষে না ফেলে) শুনতে পেলেন তখন তিনি নির্দেশ দিলেন পিঁপড়াটিকে (ধরে আমার কাছে) নিয়ে এসো। খাদেমরা পিঁপড়াকে তাঁর নিকট নিয়ে এলো। তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি পিঁপড়াদেরকে আমার অত্যাচারের ভয় দেখালে কেন? তুমি কি জানো না আমি একজন ন্যায়পরায়ণ নবী? তুমি (তোমার পিঁপড়া বাহিনীকে) কেন বলেছ لَا يَحْطِمَنَّكُمْ سُلَيْمَانُ وَجُنُوْدُه (সুলাইমান এবং তাঁর সৈন্যদল যেন তোমাদেরকে পিষে না ফেলে)?
পিঁপড়া বলল, হে আল্লাহর নবী! আপনি কি আমার অবশিষ্ট
وَهُمْ لَا يَشْعُرُوْنَ (অথচ তারা টের পাবে না) কথাটি শুনেন নি? এছাড়া এ (পিষে মারা) দ্বারা আমি আসলে পা দ্বারা জান পিষে মারা উদ্দেশ্য নেই নি; বরং হাতমে কলব বা অন্তরকে ভেঙে দেওয়া বুঝিয়েছি। (অর্থাৎ, পিঁপড়াদেরকে সতর্ক করার ক্ষেত্রে আমার এ উদ্দেশ্য ছিল না যে, সুলাইমান আলাইহিস সালাম এবং তাঁর সৈন্যদল তোমাদের প্রাণ নষ্ট করে দেবে বরং আমার উদ্দেশ্য তো ছিল এই যে, তোমাদের অন্তঃকরণকে নষ্ট করে দেবে।) কেননা, আমি আশঙ্কা করেছি যে, আল্লাহ তা'আলা আপনাকে যে মান-মর্যাদা ও বিশাল রাজত্ব দান করেছেন তা এসব পিঁপড়ারা দেখে (নিজেদের কাছে তা অনুপস্থিত পেয়ে ঐসব) নিয়ামতের অকৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবে (যেসব নেয়ামত আল্লাহ্ পাক তাদের অর্থাৎ পিঁপড়াদের মাঝে উপস্থিত আছে)। কমপক্ষে আপনাকে (এবং আপনার দলবল) দেখে তারা আল্লাহর যিকির থেকে তো বিরত থাকত।
অতঃপর হযরত সুলাইমান (আ.) পিঁপড়াকে বললেন, আমাকে কিছু নসিহত করো। পিঁপড়া বলল, আপনি জানেন কি আপনার পিতার নাম দাউদ কেন রাখা হয়েছে? তিনি বললেন, না। পিঁপড়া বলল, কেননা, তিনি তাঁর হৃদয়ের জখমের চিকিৎসা করেছেন। (পিঁপড়া পুনরায় জিজ্ঞেস করলো-) আপনি কি জানেন আপনার নাম সুলাইমান কেন রাখা হলো? তিনি বললেন, না। পিঁপড়া বলল, আপনি সুস্থ-শান্ত বক্ষ ও হৃদয়ের অধিকারী। পিঁপড়া আবার জিজ্ঞেস করল, আপনি কি জানেন আল্লাহ তা'আলা বায়ুকে আপনার অনুগত করে দিয়েছেন কেনো? তিনি বললেন, না। পিঁপড়া বলল, এর দ্বারা আল্লাহ্ তা'য়ালা আপনাকে এ কথা বুঝিয়েছেন যে, দুনিয়া পুরোটাই হলো বায়ু। সুতরাং যে ব্যক্তি দুনিয়ার উপর ভরসা করল যেন সে বায়ুর উপর ভরসা করল।