ফতোয়াঃ-
ফতোয়ার আভিধানিক অর্থঃ-
কোনো প্রশ্নের জবাব দেওয়া, কোনো বিষয়ে ব্যাখ্যা বা পরামর্শ দেওয়া। প্রশ্ন বা বিষয়টি শরীয়তের কোনো বিধান বিষয়ক হতে পারে অনুরূপ পার্থিব কোনো বিষয়েরও হতে পারে। এর বহুবচন ফাতাওয়া।
ফতোয়ার পারিভাষিক অর্থঃ-
ইবনে ইমাদ রাহ. বলেন, কোনো অস্পষ্ট বিষয়ের সুস্পষ্ট বর্ণনাই হলো ফতোয়া।- আলমুহীত ফিল লুগাহ ২/৩৮২। আরবি ভাষার নির্ভরযোগ্য প্রাচীন অভিধান গ্রন্থ আল কামুসুল মুহীত, মাজদুদ্দীন ফাইরুযাবাদী ১/১৭০২ ও লিসুনুল আরব, ইবনে মানজুর আফ্রিকী ১০/২৯২ তে ফতোয়ার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, الفتوى ما افتى به الفقيه অর্থ, কারো প্রশ্নের উত্তরে ফিকহ ও ফতোয়া-বিশেষজ্ঞ শরীয়তের যে বর্ণনা দেন তাই ফতোয়া।
বাংলাদেশ এশিয়া সোসাইটি প্রকাশিত, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম সম্পাদিত বাংলা পিডিয়ায় (নেট সংস্করণ) ফতোয়ার সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘ফতোয়া বা ফতওয়া (আরবি الفتوى বহুবচন ফাতাওয়া আরবি الفتاوى) হলো, বিধান ও সমাধান, যা কোনো ঘটনা বা অবস্থার প্রেক্ষিতে ইসলামী শরীয়তের দলীলের আলোকে মুফতী বা ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞগণ প্রদান করে থাকেন। যখন কোনো ব্যক্তি সরাসরি কুরআন ও হাদীস কিংবা ফিকহের আলোকে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান বের করতে অপারগ হন তখন তিনি মুফতীর কাছে এই বিষয়ে সমাধান চান। এটিকে ইসলামের পরিভাষায় ইসতিফতা (আরবিاستفتاء ) বলে। মুফতী তখন ইসলামী শরীয়তের আলোকে সমস্যার সমাধান জানিয়ে দেন। এ সমাধান প্রদান করাকে ইসলামের পরিভাষায় ইফতা (আরবিতে افتاء) বলে। এবং প্রদত্ত সমাধান বা বিধানটিকে ফতোয়া বলে।’
মাসআলাঃ-
এটা একটি আরবি মূল ক্রিয়া। এর অর্থ প্রশ্ন করা, জানতে চাওয়া। এর বহুবচন আসে মাসাইল। এ অর্থে মাসআলা ফতোয়ার সমার্থবোধক।
ফতোয়া এবং মাসআলার মাঝে মৌলিকভাবে কোনো পার্থক্য নেই। "মাসআলা" ফতোয়া সংশ্লিষ্ট ছয়টি শব্দাবলির অন্যতম একটি শব্দ।
ফাতওয়ায়ে তাতারখানিয়া, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া এবং ফাতাওয়ায়ে শামী প্রভৃতি বিখ্যাত ফতোয়া গ্রন্থগুলোর ফতোয়াগুলো সবই প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে লিখিত উত্তরমালা নয়। অতএব ফতোয়া এবং মাসআলার মাঝে মৌলিকভাবে পার্থক্য নেই। যদিও ইলমী পরিবেশে প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে লিখিত উত্তরকে ফতোয়া এবং ফিকহের গ্রন্থগুলোতে সংকলিত ফিকহী বিধানাবলিকে মাসআলা নামে অভিহিত করা হয়।