বাতাসে শব্দের উৎপত্তি হলে সেটা আমাদের কানের ফুটো দিয়ে এক্সটার্নাল মিটাসে প্রবেশ করে। এক্সটার্নাল মিটাস হচ্ছে কানের ফুটো থেকে শুরু করে ২৪ মি.মি. লম্বা একটা ক্যানেল। এই ক্যানেলের শেষ মাথায় থাকে একটা পাতলা, স্বচ্চ পর্দা। যার নাম টিমপেনিক পর্দা। শব্দ তরঙ্গ এক্সটার্নাল মিটাস দিয়ে গিয়ে সেই পর্দাতে আঘাত করে। ফলস্বরুপ, পর্দাটি কেপে উঠে। জেনে রাখা ভালো, টিমপেনিক পর্দাকে ইয়ার ড্রামও বলা হয়। আমাদের কানে ছোট ছোট তিনটা অস্থি বা হাড় আছে। এদের নাম যথাক্রমে ম্যালিয়াস, ইনকাস, স্টেপিস। এরা পরপর একটার সাথে আরেকটা যুক্ত থাকে। টিমপেনিক পর্দাটা ম্যালিয়াসের সাথে যুক্ত থাকে। শব্দতরঙ্গের আঘাতে যখন টিমপেনিক পর্দা কেঁপে উঠে, সাথে সাথে এই তিনটি হাড়ও কেঁপে উঠে। সবশেষে কম্পিত হয় স্টেপিস। মজার ব্যাপার হচ্ছে আমাদের দেহের সবচেয়ে ছোট হাড় হচ্ছে এই স্টেপিস। স্টেপিসের কম্পনের ফলে একটি তরঙ্গমালা সৃষ্টি হয়ে স্ক্যালা ভেস্টিবুলির পেরিলিম্ফ এবং স্ক্যালা মিডিয়ার এন্ডোলিম্ফ হয়ে অর্গান অফ কর্টিতে আসে। অর্গান অফ কর্টি হচ্ছে আমাদের দেহের অডিটরি রিসেপ্টর। অর্থাৎ এটি শব্দতরঙ্গকে রিসিভ করে। এতোক্ষণ যা বলছিলাম সবাই শব্দ বয়ে অর্গান অফ কর্টির কাছে নিয়ে আসে। অর্গান অফ কর্টি তখন শব্দ অনুভূতি ককলিয়ার নার্ভের মাধ্যমে ব্রেইনে পাঠায়। ব্রেইন এই শব্দকে বিশ্লেষণ করে তার অর্থ উদঘাটন করে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। আর এই ঘটনাগুলি ঘটে যায় মুহুর্তের মধ্যেই। উপরোক্ত বাধা বিপত্তি গুলো পেরিয়েই কেবল আমরা শব্দ শুনতে পাই।