প্রথম কথা হলো - আল্লাহ তা'য়ালার হুকুম ছাড়া কোনোকিছুই হয় না, হতে পারে না, সম্ভব নয়।
দ্বিতীয় কথা হলো - একমাত্র আল্লাহ তা'য়ালাই ওয়াজিবুল উজূদ, তিনি ছাড়া আর কোনোকিছুই ওয়াজুবুল উজূদ নয়। পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ, ডান, বাম, উপর, নিচ, ইত্যাদি যত দিক আছে, সমস্ত দিক এর স্রষ্টা আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীনেরই সৃষ্টি। আল্লাহ পাক জগৎ সৃষ্টি করেছেন বিধায়ই পূর্ব,পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ, উপর, নিচ, ডান, বাম ইত্যাদি দিক সমূহের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি সৃষ্টি না করলে তো এসব অস্তিত্বই লাভ করতো না। যেমন - আপনি একটি খাট তৈরী করলেন, এখন খাট তৈরী করেছেন বিধায়ই তো খাটের উপর নিচ আছে, ডান বাম আছে। উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম আছে। খাট তৈরী না করলে তো আর খাটের উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম ডান বাম উপর নিচ এই দিকগুলো তৈরী হতো না। আল্লাহ্ পাকই এই জগৎ সৃষ্টি করেছেন, জগৎ সৃষ্টির পর তিনিই সৃষ্টি করেছেন বা নির্ধারণ করে দিয়েছেন যে, এই দিকটা হবে পূর্ব, এই দিকটা হবে পশ্চিম, এই দিকটা হবে উত্তর, এই দিকটা দক্ষিণ, এটা হবে ডান, এটা হবে বাম, এটা হবে উপর আর এটা হবে নিচ। সুতরাং ওয়াজিবুল উজূদ একমাত্র আল্লাহ পাকই, তিনি ছাড়া আর কোনোকিছুই ওয়াজিবুল উজূদ নয়, ওয়াজিবুল উজূদ হতে পারে না।
এরপর তৃতীয় কথা হলো -
প্রকৃতির স্রষ্টাও আল্লাহ্ পাক, এটা বিশ্বাস করেন তো? প্রত্যেকটা বস্তুরই একটা ধর্ম আছে, বস্তুটা তার নিজস্ব ধর্মানুযায়ী চলে। ধর্মটাই মূলত ওই বস্তুর প্রকৃতি। বস্তুটাও আল্লাহ্ পাক সৃষ্টি করেছেন, ওই বস্তুর ধর্ম কেমন হবে সেটাও আল্লাহ্ পাক সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ্ পাক ইচ্ছা করলে বস্তুর ধর্ম পরিবর্তন করে দিতে পারেন, আটকে রাখতে পারেন, বন্ধ রাখতে পারেন। যেমন- আগুন আল্লাহ্ পাক সৃষ্টি করেছেন। আগুনের ধর্ম পুড়িয়ে ফেলা - এটাও আল্লাহ পাকই সৃষ্টি করেছেন। এই আগুনই হজরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে পোড়াতে পারে নি বা পোড়ানো বন্ধ রেখেছিলো - এটাও হয়েছে আল্লাহ্ পাকেরই হুকুমে বা নির্দেশে। অথচ আগুনের ধর্ম তথা প্রকৃতি ছিলো পুড়িয়ে ফেলা।
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বস্তু মিলেই এই বিশাল জগতের সৃষ্টি হয়েছে, আর এই সামগ্রিক বাস্তুজগতের সামগ্রিক ক্রিয়াশীল ধর্মই হচ্ছে প্রকৃতি। যেটাকে নাস্তিকরা মানে খুব শখ করে। অথচ এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বস্তু মিলেই এই বিশাল জগত, যেটা আল্লাহ্ পাকই সৃষ্টি করেছেন। আবার এই বিশাল জগতেরই এই বিশাল প্রকৃতি - এটাও আল্লাহ্ পাকই সৃষ্টি করেছেন। নিজেদেরকে খুব বড় জ্ঞানী মনে করা এসব নাস্তিকরা প্রকৃতি মানতে রাজি, কিন্তু প্রকৃতির স্রষ্টা আল্লাহ তা'য়ালাকে মানতে রাজি নয়৷ এর একটাই কারণ বলে আমি মনে করি! আর সেটা হচ্ছে মানুষের প্রতি দেয়া আল্লাহর জীবন বিধান। সৎ কর্মের পুরস্কার আর অসৎ কর্মের শাস্তি। এখানে মূলত অসৎ কর্মের শাস্তিটাই ফ্যাক্ট বা মূল বিষয়। আল্লাহকে মানলে আল্লাহর দেয়া জীবন বিধানকে মানতে হবে, না মানলে শাস্তি অবধারিত, জাহান্নাম নিশ্চিত। তাই তারা আল্লাহকে না মেনে প্রকৃতিকে মানছে। কারণ, প্রকৃতিকে মানলে জান্নাত জাহান্নামের ভয় নাই।
কিন্তু আসলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। তারা যতই আল্লাহকে না মানুক, প্রকৃতিকে খোদা মানুক বা সবকিছুই প্রকৃতি থেকে প্রাকৃতিকভাবেই হচ্ছে বলে বিশ্বাস করুক - এই প্রকৃতিই একদিন তার প্রাকৃতিক নিয়মানুযায়ী আল্লাহ্ কে অবিশ্বাসী ওই নাস্তিকদেরকে মহান মহিম আল্লাহ্ পাক রাব্বুল আলামীনের দরবারে উপস্থিত করে দেবে। সেদিন তখন এই প্রকৃতি পূজারী নাস্তিকরা প্রাকৃতিকভাবে কি উত্তর দেয় আমরা দেখবো ইংশা আল্লাহ্।