ওভারিয়ান সিস্ট হল ডিম্বাশয় এর মধ্যে একটি তরল ভরা থলি। প্রায়ই এর কোন লক্ষণ থাকেনা। তবে মাঝে মাঝে উদরস্ফীতি, তলপেটে ব্যথা অথবা পিঠের নিচের অংশে ব্যথা দেখা যেতে পারে৷ অধিকাংশ সিস্টই ক্ষতিকর নয়। যদি সিস্টটি ফেটে যায় অথবা ডিম্বাশয় মুচড়ে যায় , তখন প্রচন্ড ব্যথা হতে পারে। এর থেকে বমি হতে পারে অথবা দুর্বল লাগতে পারে।
অধিকাংশ ওভারিয়ান সিস্ট যেমন ফলিকিউলার সিস্ট সমূহ অথবা করপাস লুটেয়াম সিস্ট সমূহ ডিম্বপাত এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হয়। অন্যান্য ধরনের মধ্যে আছে এন্ডোমেট্রিওসিস এর জন্য সিস্ট , ডারময়েড সিস্ট এবং সিস্টাডেনোমা সমূহ।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম অসুখে দুটি ডিম্বাশয়ে অনেক ছোট ছোট সিস্ট তৈরী হয়। শ্রোণীর প্রদাহ রোগ হলেও সিস্ট তৈরী হয়। খুব কম ক্ষেত্রে সিস্ট ডিম্বাশয় ক্যান্সার এ পরিবর্তিত হয়। আল্ট্রাসাউন্ড দিয়ে পেলভিক পরীক্ষা করে রোগনির্ণয় করা হয় অথবা আরও অন্যান্য পরীক্ষা করে বিস্তারিত অবস্থা বোঝা যায়।
প্রায়শই, সিস্টগুলি কেবল সময়ের সাথে পর্যবেক্ষণ করা হয়। এগুলি থেকে ব্যথা হলে, প্যারাসিটামল (অ্যাসিটামিনোফেন) বা আইব্রুফেন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
যারা ঘন ঘন এই অসুখে আক্রান্ত হয় তাদের আর সিস্ট যাতে না হয় সেজন্য হরমোনাল গর্ভ নিরোধক ব্যবহার করা যায়। যদিও, বর্তমান সিস্টের চিকিৎসা হিসাবে গর্ভ নিরোধকের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কয়েক মাসের মধ্যে যদি
এগুলি ঠিক না হয়, বড় হয়ে যায়, অস্বাভাবিক দেখতে লাগে, বা ব্যথা হয়, তাদের অস্ত্রোপচার করে সরানো যেতে পারে। প্রজনন সময়ের মধ্যে বেশিরভাগ মহিলার প্রতি মাসে ছোট ছোট সিস্ট তৈরী হয়। রজোনিবৃত্তির আগে ৮% মহিলার বড় সিস্ট দেখা যায় যেগুলি অসুবিধা ঘটাতে পারে। রজোনিবৃত্তির পর প্রায় ১৬% মহিলার ওভারিয়ান সিস্ট থাকে এবং থাকলে সেগুলি থেকে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
লক্ষণ ও উপসর্গঃ
যদিও নিম্নলিখিত কিছু বা সব কটি উপসর্গই থাকতে পারে, তবুও কোনো উপসর্গই নেই এমনটিও হতে পারে ৷
পেটে ব্যথা, পেটে বা শ্রোণীচক্রে হাল্কা ব্যথা, বিশেষ করে যৌনসম্পর্কের সময়। জরায়ু থেকে রক্তপাত, ঋতু শুরুর প্রথমে বা চলার সময়ে বা শেষে ব্যথা; অনিয়মিত ঋতু, অথবা অস্বাভাবিক রক্তপাত বা রক্তের ছিটা লাগা। পেট ভরে থাকা, ভারি লাগা, চাপ লাগা, পেট ফোলা, বা পেট ফাঁপা ।
যখন ডিম্বাশয় তে একটি সিস্ট ফেটে যায়, তলপেটের একপাশে হঠাৎ ও তীব্র ব্যথা হতে পারে।
মূত্রত্যাগ এর ঘটনের সংখ্যা এবং সহজতায় পরিবর্তন (যেমন মূত্রস্থলী ) সম্পূর্ণরূপে খালি করায় অক্ষমতা, অথবা সংলগ্ন শ্রোণীচক্র এ চাপের কারণে বাওয়েল মুভমেন্ট এ অসুবিধা।
ধাতুগত উপসর্গ সমূহ যেমন অবসাদ , মাথাব্যাথা ইত্যাদি। বমি ভাব বা বমি, ওজন বৃদ্ধি ৷ এছাড়া অন্যান্য উপসর্গগুলি সিস্টের কারণের উপর নির্ভর করতে পারে ৷
* পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম
(পিসিওসি) এর কারণে সিস্ট হলে যে
লক্ষণগুলি দেখা যায় সেগুলি হল মুখের লোম অথবা গোফ, ব্রণ, স্থূলতা এবং অনুর্বরতা বৃদ্ধি পাওয়া।
* এন্ডোমেট্রিওসিস এর কারণে সিস্ট হলে ঋতুর সময়ে ভারি লাগতে পারে, এবং যৌনসম্পর্ক বেদনাদায়ক হয়।