ইলমে দ্বীন শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর উপর ফরজ। কতটুকু শিক্ষা করা ফরজ? যতটুকু শিখলে একজন মানুষ পরিপূর্ণ ভাবে দ্বীনের চলতে পারে, ততটুকু শিক্ষা করাই ফরজ। আর তা হচ্ছে - সমস্ত ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নতে মুয়াক্কাদা, হালাম ও হারামের ইলম। এর বাইরে যত ইলম রয়েছে তন্মধ্যে মুস্তাহাবের ইলম অর্জন মুস্তাহাব আর নফলের ইলম অর্জন নফল। মুহাক্কিক মুদাক্কিক আলিম হওয়া তথা শরীয়তের সুগভীর পাণ্ডিত্য অর্জন করা সকল মুসলমানের উপরই ফরজ নয়। এটা ফরজে কেফায়া। দেশ ছোট হলে দেশের একজন দুজন, আর দেশ বড় হলে শহরের একজন দু'জন আলিম এরকম দ্বীনি পাণ্ডিত্য অর্জন করাই যথেষ্ট। অর্থাৎ সকলের পক্ষ থেকে ফরজ আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু যদি শহর বা একটি ছোট দেশের কেউই এ পরিমাণ ইলম অর্জন না করে, তবে সকলেই গুণাহগার হবে।
উপরের ফরজ পরিমাণ ইলমের বাইরে ইলমের পাণ্ডিত্য অর্জনের যে স্তরটি আলোচনা করা হলো, তা কেবলমাত্র পুরুষের জন্যই প্রযোজ্য। মেয়েদের জন্য নয়। মেয়েরা মেয়েদের ফরজ পরিমাণ ইলম বিয়েশাদী, স্বামী-সংসার, সন্তানাদী, গর্ভাবস্থা - সমেতই অর্জন করতে পারে। এসব বিষয় মেয়েদের ইলম অর্জনের মৌলিক কোন প্রতিবন্ধকতা নয়। এসবের আগে-পরে মিলেও ইলম অর্জন করতে পারে। শুধুমাত্র ইলম অর্জনের জন্য মেয়েদের বিয়ে-শাদি, সন্তান গ্রহণ পিছিয়ে দেওয়া নিতান্তই বোকামী। এমনটা করা উচিত নয়।
আর জাগতিক পড়াশোনার জন্য তো আরও উচিত নয়। আর এর জন্য গর্ভের সন্তান নষ্ট করা তো চরম পর্যায়ের বোকামী ও হঠকারী সিদ্ধান্ত। চার মাস বয়সী গর্ভের ভ্রুণ নষ্ট করা একটি মানুষ হত্যারই শামিল। অর্থাৎ একজন মানুষ হত্যা করা যেমন অপরাধ ও গুণাহের কাজ, ঠিক তেমনি চারমাস বয়সী গর্ভের ভ্রুণ নষ্ট করা শরীয়তের দৃষ্টিতে অপরাধ ও গুনাহের কাজ।
ভ্রূণহত্যাই যদি মানুষ হত্যার সমান হয়, তবে পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া সন্তান হত্যার অপরাধের বিষয়টি বলার অপেক্ষা রাখে না। এটি নিতান্তই একটি হারাম কাজ। আর পড়াশোনা শরীয়ত সমর্থিত কোন ওজর নয়। পড়াশোনা পরেও করতে পারবে। সুতরাং শুধুমাত্র পড়াশোনার ওজরের কারণে বা অজুহাতে গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট করার কোনো সুযোগ নেই। এটা হারাম।