হিজড়া সম্প্রদায়ের জন্য আলাদাভাবে শরীয়তের কোন বিধান নেই। হিজড়াগণ হয়ত পুরুষ হিসেবে পুরুষদের উপর বর্তানো সকল হুকুম পালন করবে অথবা মহিলা হিসেবে মহিলাদের উপর বর্তানো সকল হুকুম পালন করবে।
এখন হিজড়া সম্প্রদায়ের কোন্ সদস্য কোন্ দিকটা বেছে নিয়ে শরীয়তের বিধান পালন করবে? সে কি তার খেয়াল খুশিমত পুরুষদের মত শরীয়তের পুরুষালি বিধান মেনে চলবে নাকি মেয়েদের মত মেয়েলি বিধানগুলো মেনে চলবে - কোনটা করবে সে?
এটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সে পেশাব করে কেমন অঙ্গ দিয়ে তার হিসেবে। সে যদি পুরুষের মত যৌনাঙ্গ দিয়ে পেশাব করে, অর্থাৎ তার পেশাব করার অঙ্গটি যদি পুরুষের হয় বা কাছাকাছি হয় বা পুরুষাঙ্গের অধিক নিকটবর্তী বা পুরুষাঙ্গের সাথে অধিক সাদৃশপূর্ণ হয়, তবে তাকে একজন পুরুষ হিসেবেই ধরা হবে। এবং তার উপর পুরুষের যাবতীয় শরয়ী বিধান প্রযোজ্য হবে। বেগানা নারীদের সাথে তার উপরও পর্দা করা ফরজ। সে নামাজও আদায় করবে পুরুষদের ন্যায় মসজিদে গিয়ে জামায়াতের সাথে। তখন সে মাযহাব অনুসারী হবে সে মাযাহাব মতোই বুকে বা নাভির নিচে হাত বাঁধবে। মালেকি মাযহাব মতাবলম্বী হলে হাত বাঁধা ছাড়াই নামাজ পড়বে। মোটকথা, সে মাযহাব মতাবলম্বী হবে, সে মাযহাব মতোই সে যাবতীয় বিধিবিধান পালন করবে। তার জন্য দাঁড়ি সেভ করে মেয়ে সাজার কোনো সুযোগ তার নেই। বরং এতে অন্যান্য পুরুষদের মতোই দাঁড়ি সেভ করার গুণাহ্ তার আমলনামায় লিপিবদ্ধ হবে।
আর যদি সে নারীদের যৌনাঙ্গের মত মতো যৌনাঙ্গ দিয়ে পেশাব করে, অর্থাৎ তার পেশাব করার অঙ্গটি যদি নারীর মত হয় নারীদের যৌনাঙ্গের মতো হয় বা কাছাকাছি হয় বা নারীদের যৌনাঙ্গের অধিক নিকটবর্তী বা যৌনাঙ্গের সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ হয়, তবে তাকে একজন নারী হিসেবেই ধরা হবে। আর তার উপর নারীদের যাবতীয় শরয়ী বিধান প্রযোজ্য হবে। বেগানা পুরুষদের সাথে তার উপরও পর্দা করা ফরজ। সে তখন নামাজ আদায় করবে মহিলাদের ন্যায় ঘরে অবস্থান করে। হানাফী মতাবলম্বিনী হলে বুকে হাত বাঁধবে। বাকী সকল আমলও সে তার মাযাহাবের ফতোয়া অনুসারেই করবে।
এখন তার যৌনাঙ্গ কেমন তার সাক্ষ্য সর্বপ্রথম গ্রহণ করা হবে তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে। কারণ, তাঁরা তো জানেন যে, ছোটকালে সে কিভাবে কোন্ অঙ্গ দিয়ে পেশাব করতো। ছোটকালে বিষয়টি প্রকাশ না পেলে তার ডাক্তারের কাছ থেকে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। কেননা, সে যখন বড় হওয়ার পর ভিন্ন অবস্থা দেখতে পেয়েছে, তখন নিশ্চয়ই সে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েছে। এরপর সবশেষে সে নিজে মহান আল্লাহ্ তা'য়ালাকে হাজির-নাযির জেনে মেনে নিজের ব্যাপারে নিজে কসম করে সাক্ষ্য দিবে। অতঃপর পুরুষের দিক বা নারীর দিক - যেকোনো একটি দিক সাব্যস্ত হয়ে যাওয়ার পর মৃত্যু পর্যন্ত সে পুরুষ বা নারী যেটা সাব্যস্ত হয়েছে তার উপরই আমল করবে।
আল্লাহ্ তা'য়ালাই ভালো জানেন।