প্রশ্নের ধরন দেখেই বোঝা যাচ্ছে- এখানে কিশোর বালকদের সাহচার্য অন্যদের উপর তথা বড়দের উপর কেমন প্রভাব ফেলে সেটা জিজ্ঞাস্য, কিশোর বালকদের জন্য কিরূপ সাহচর্য প্রয়োজন সেটা জিজ্ঞাস্য নয়।
কিশোর বালকদের সাহচার্য যদি অতিরিক্ত হয়, তবে অবশ্যই তা বড়দের উপর প্রভাব ফেলে। এজন্যই আল্লাহ্ ওয়ালাগণ দাঁড়িহীন কিশোর বালকদের সংশ্রব এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন। কিশোর বালকদের সংশ্রব থেকে কিভাবে শয়তান তলে তলে উপকার লাভ করে এবং শেষ পর্যন্ত মানুষকে ধ্বংস করে দেয়, তা সত্যিই অকল্পনীয়।
ইমাম মুহাম্মাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি যখন ইমাম আবু হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর ছাত্র হন, শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন, তখন ইমাম মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর মুখে দাঁড়ি ছিলো না। তাই ইমাম আবু হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি ছোট্ট বালক ইমাম মুহাম্মাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে বলেন - ক্লাসে তুমি আমার সামনে নয়, বরং পেছনে বসবে। (তাঁর দৃষ্টি যেনো ইমাম মুহাম্মাদের উপর না পরে এজন্য তিনি এমনটা করেছিলে। আর তিনিও শিক্ষকের নির্দেশ অনুযায়ী নিয়মিত পেছনেই বসতে থাকেন।) অনেকদিন পর যখন পেছন দিক থেকে রৌদ্রের আলোতে ইমাম মুহাম্মাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর মুখের লম্বা ছায়া ইমাম আবু হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর সামনে পড়ে, সেই ছায়াতে তিনি ইমাম মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি এর থুতনিতে দাঁড়ির ছায়াও দেখতে পান, তখন তাঁকে সামনে ডেকে এনে দেখতে পান যে, তাঁর মুখে দাঁড়ি উঠেছে। তখন থেকে ইমাম আবু হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইমাম মুহাম্মাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে তাঁর সামনে বসার অনুমতি দিলেন।
কিশোর বালকদের সাহচার্য মানুষের উপর কেমন প্রভাব ফেলে তা আমরা নিচের এই ঘটনাটি দ্বারাই বুঝতে পারিঃ-
হজরত আবূ সাঈদ খাযযায রাহিমাহুল্লাহ্ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদিন ইবলিস শয়তানকে স্বপ্নে দেখলাম যে, সে আমার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। আমি তাকে বললাম, এদিকে এসো! সে বলল, তোমাদের কাছে এসে কী করব? যখন তোমরা নিজেদের থেকে ঐ বস্তুকে পশ্চাদে নিক্ষেপ করেছ, যা দ্বারা আমি মানুষদেরকে ধোঁকা দিয়ে থাকি। আমি বললাম, জিনিসটি কী? সে বলল, দুনিয়া। অনন্তর সে যেতে যেতে আমার দিকে ফিরে বলল, তবে আমার (উপকারের জন্য) তোমাদের মাঝে শুধুমাত্র একটি ছিদ্রপথ আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সেটা কী? সে বলল, কিশোর বালকদের সাহচর্য লাভ!
আল্লাহ্ পাক আমাদেরকে দাঁড়িবিহীন কিশোর বালকদের ফিতনা থেকে হিফাজত করুন, আমীন ইয়া আরহামার রাহিমীন।