হাইড্রোজেন বর্ণালী হলো হাইড্রোজেন পরমাণুর বিভিন্ন শক্তিস্তরের ইলেকট্রনগুলো যখন তাদের নিম্ন শক্তিস্তরে পতিত হয় তখন নির্গত আলোর বর্ণালী। এই বর্ণালীতে সাতটি স্বচ্ছ রেখা দেখা যায়, যাকে লাইমান, বামার, পাশাঙ, ব্র্যাকট, এবং পফন্ড রেখা বলা হয়। এই রেখাগুলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য পরমাণুর শক্তিস্তরগুলোর মধ্যে দূরত্বের উপর নির্ভর করে।
হাইড্রোজেন বর্ণালী একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারণ এটি পরমাণুর কাঠামো এবং রসায়নের উপর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। এই বর্ণালী থেকে বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন যে হাইড্রোজেন পরমাণুতে একটি ইলেকট্রন কতগুলো শক্তিস্তরে অবস্থান করতে পারে এবং প্রতিটি শক্তিস্তরের শক্তি কত। এছাড়াও, এই বর্ণালী থেকে তারা পরমাণুর ইলেকট্রন কক্ষপথের আকৃতি এবং আকার সম্পর্কে জানতে পারেন।
হাইড্রোজেন বর্ণালী বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, এটি জ্যোতির্বিজ্ঞানে তারার তাপমাত্রা এবং রাসায়নিক গঠন নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও, এটি রসায়নে পরমাণুর শক্তিস্তর এবং ইলেকট্রন কক্ষপথ সম্পর্কে গবেষণা করতে ব্যবহৃত হয়।
হাইড্রোজেন বর্ণালী নিয়ে প্রথম পরীক্ষা করেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী জোহানেস রিচার্ড ডেল্টন। তিনি ১৮৬৮ সালে সূর্যের আলোকে বিচ্ছুরিত করে হাইড্রোজেন বর্ণালী পর্যবেক্ষণ করেন। তারপর এই বর্ণালীটি অন্যান্য তারার আলোতেও দেখা যায়।
হাইড্রোজেন বর্ণালী নিয়ে পরবর্তীতে অনেক গবেষণা হয়েছে। এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা হাইড্রোজেন পরমাণুর শক্তিস্তর এবং ইলেকট্রন কক্ষপথ সম্পর্কে অনেক নতুন তথ্য আবিষ্কার করেছেন।