মুখোপাঙ্গ হলো পোকামাকড়, মাকড়সা, কাঁকড়া, চিংড়ি, ঝিনুক, ইত্যাদি মেরুদণ্ডহীন প্রাণীর মুখের চারপাশের নড়নক্ষম, সন্ধিযুক্ত উপাঙ্গ। মুখোপাঙ্গের মূল কাজ হলো খাদ্য গ্রহণ, মুখের ছিদ্রে খাদ্য প্রবেশ করানো, খাদ্য চূর্ণ করা এবং খাদ্যকে গিলে ফেলা।
মুখোপাঙ্গের গঠন ও কাজ পোকামাকড়ের প্রজাতির উপর নির্ভর করে। সাধারণত, মুখোপাঙ্গ পাঁচটি অংশ নিয়ে গঠিত:
-
ল্যাব্রাম (Labrum): মুখের উপরের অংশে অবস্থিত একটি পাতলা, চামড়ার মতো অংশ। এটি মুখের ছিদ্রকে আবৃত করে রাখে এবং খাদ্যকে মুখের ছিদ্রে প্রবেশ করাতে সাহায্য করে।
-
ম্যান্ডিবল (Mandible): মুখের দুই পাশে অবস্থিত দুটি শক্ত, ব্লেডের মতো অংশ। এগুলো খাদ্যকে চূর্ণ করার কাজে ব্যবহার হয়।
-
ম্যাক্সিলা (Maxilla): ম্যান্ডিবলের নিচে অবস্থিত দুটি জোড়া অংশ। এগুলো খাদ্যকে ধরে রাখা এবং চূর্ণ করার কাজে ব্যবহার হয়।
-
ল্যাবিয়াম (Labium): মুখের নিচের অংশে অবস্থিত একটি পাতলা, চামড়ার মতো অংশ। এটি মুখের ছিদ্রকে আবৃত করে রাখে এবং খাদ্যকে গিলে ফেলায় সাহায্য করে।
-
হাইপোফ্যারিক্স (Hypopharynx): মুখের নীচে অবস্থিত একটি নলাকার অংশ। এটি খাদ্যকে গিলে ফেলার সময় মুখের ছিদ্রকে বন্ধ করে রাখে।
পোকামাকড়ের বিভিন্ন প্রজাতির মুখোপাঙ্গের গঠন ও কাজ ভিন্ন ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ, ঘাসফড়িং, পিঁপড়া, মৌমাছি, ইত্যাদির মুখোপাঙ্গ চর্বন-উপযোগী (chewing)। এগুলো খাদ্য চূর্ণ করে খেয়ে থাকে। অন্যদিকে, মশা, মাছি, ইত্যাদির মুখোপাঙ্গ ছিদ্রকারী (piercing)। এগুলো খাদ্যের ছিদ্র করে রস চুষে খেয়ে থাকে।
মুখোপাঙ্গ পোকামাকড়ের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি পোকামাকড়ের খাদ্য গ্রহণ, বৃদ্ধি, এবং বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়।