যে মৌলের একই পরমাণুতে বিভিন্ন সংখ্যক ইলেকট্রন থাকতে পারে, সেই মৌলকে বহুরূপী মৌল বলে। বহুরূপী মৌলের বিভিন্ন রুপকে আইসোটোপ বলে। আইসোটোপের রাসায়নিক ধর্ম একই থাকে কিন্তু ভৌত ধর্ম ভিন্ন হয়।
বহুরূপী মৌলের উদাহরণ:
-
হাইড্রোজেন (H) - তিনটি আইসোটোপ রয়েছে: প্রোটিয়াম (1H), ডিউট্রিয়াম (2H), ট্রাইটিয়াম (3H)।
-
কার্বন (C) - ছয়টি আইসোটোপ রয়েছে: কার্বন-12 (12C), কার্বন-13 (13C), কার্বন-14 (14C), কার্বন-15 (15C), কার্বন-16 (16C), কার্বন-17 (17C)।
-
অক্সিজেন (O) - তিনটি আইসোটোপ রয়েছে: অক্সিজেন-16 (16O), অক্সিজেন-17 (17O), অক্সিজেন-18 (18O)।
বহুরূপী মৌলের গঠন:
বহুরূপী মৌলের বিভিন্ন রুপের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে প্রোটন সংখ্যা একই থাকে কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা ভিন্ন হয়। যেমন, হাইড্রোজেনের তিনটি আইসোটোপের মধ্যে প্রোটন সংখ্যা একই (1) কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা ভিন্ন (প্রোটিয়ামে নিউট্রন নেই, ডিউট্রিয়ামে একটি নিউট্রন আছে, ট্রাইটিয়াম-এ দুটি নিউট্রন আছে)।
বহুরূপী মৌলের ধর্ম:
বহুরূপী মৌলের বিভিন্ন রুপের পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস একই থাকে তাই তাদের রাসায়নিক ধর্ম একই থাকে। কিন্তু তাদের ভৌত ধর্ম ভিন্ন হয়। যেমন, হাইড্রোজেনের তিনটি আইসোটোপের মধ্যে রাসায়নিক ধর্ম একই কিন্তু ভৌত ধর্ম ভিন্ন। প্রোটিয়ামের গলনাঙ্ক এবং স্ফুটনাঙ্ক সবচেয়ে কম, ডিউট্রিয়ামের গলনাঙ্ক এবং স্ফুটনাঙ্ক প্রোটিয়ামের চেয়ে বেশি এবং ট্রাইটিয়াম-এর গলনাঙ্ক এবং স্ফুটনাঙ্ক ডিউট্রিয়ামের চেয়ে বেশি।
বহুরূপী মৌলের ব্যবহার:
বহুরূপী মৌলের বিভিন্ন রুপের বিভিন্ন ব্যবহার রয়েছে। যেমন, হাইড্রোজেনের প্রোটিয়াম রুপকে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হয়,ডিউট্রিয়াম রুপকে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনে ব্যবহার করা হয় এবং ট্রাইটিয়াম রুপকে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কার্বনের কার্বন-12 রুপকে মানবদেহের প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়, কার্বন-13 রুপকে জীববৈচিত্র্য গবেষণায় ব্যবহার করা হয় এবং কার্বন-14 রুপকে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অক্সিজেনের অক্সিজেন-16 রুপকে বাতাসের প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়, অক্সিজেন-17 রুপকে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং অক্সিজেন-18 রুপকে গবেষণা কাজে ব্যবহার করা হয়।