তিরমিজী শরীফ
তিরমিজীর অবস্থাও সহীহাইনের চেয়ে কম নয়।এর আসল নাম মানুষের মন থেকে মুছে গেছে বলা যায়। যারা পড়েন এবং পড়ান সবার ব্রেইনের একই বাক্য শুনা যায়, এ গ্রন্থের নাম তিরমিজী।
এ কিতাব নিয়ে প্রথমত যে বিতর্ক। সেটি হল এটি সুনান নাকি জামে?
শায়েখ নাসুরুদ্দীন আলবানী রহঃ সর্বপ্রথম তিরমিজীকে দুইভাগে ভাগ করেন। একভাগের নাম দেন সহীহ তিরমিজী, আরেক ভাগের নাম দেন জঈফ তিরমিজী। এর আগে এ বেআদবী কর্ম কোন মুহাদ্দিস করেননি। কোন মুহাদ্দিসীসের সংকলিত কিতাবকে ভাগ করে ফেলার ধৃষ্টতা কেউ প্রদর্শন করেননি।
যাইহোক, নাসীরুদ্দীন আলবানীও তিরমিজী শরীফের নাম নিয়ে দীর্ঘ বাহাস করেছেন। কিন্তু ফলাফল বের করতে সমর্থ হননি।
১
অনেক মুহাদ্দিস তিরমিজী শরীফকে “সহীহ” গ্রন্থ হিসেবেও স্বীকৃতি দিয়েছেন। যেমন ইমাম হাকিম এবং খতীব বাগদাদী।
হাফেজ ইবনুস সালাহ রহঃ মুকাদ্দিমায়ে ইবনুস সালাহ গ্রন্থে এ বক্তব্য উল্লেখ করেছেন। তারপর সেটকে রদ করে বলেন, ইমাম তিরমিজী রহঃ এর বক্তব্য অনুপাতেই তিরমিজীতে বেশ ক’টি জঈফ এবং মুনকার বর্ণনাও রয়েছে। তা এটিকে সহীহ বলা ঠিক নয়।
২
অপরদিকে অনেক মুহাদ্দিস তিরমিজী শরীফকে “আলমুসনাদুল জামে” বলে নাম দিয়েছেন।
যেমন-হাফেজ আবুল কাশেম তার “ফাযায়িলুল কিতাব আলজামে লিআবী ঈসা আততিরমিজী” গ্রন্থের ৩ নং পৃষ্ঠায় তিরমিজীর নাম লিখেছেন “আলমুসনাদুল জামে”।
৩
হাফেজ ইবনে খায়ের আশশাবিলী রহঃ লিখেন “আলজামে আলমুখতাসার মিনাস সুনান আন রাসূলিল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়ামারিফাতুস সাহীহ ওয়ালমা’লুল ওয়ামা আলাইহিল আমল”।
তিরমিজী শরীফের দুই পুরাতন হাতে লেখা পান্ডুলিপিতেও এ নাম লিখা পাওয়া গেছে। একটি পান্ডুলিপি ৪৭৯ হিজরীর আরেকটি ৫৮২ হিজরীর।
প্রথম নুসখাটি শায়েখ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রহঃ এর বক্তব্য অনুপাতে ড.মোস্তাফা আজমীর মালিকানায় রয়েছে। এটি তিনি হিন্দুস্তান থেকে অনেক টাকা দিয়ে ক্রয় করেছিলেন। এটি অনেক পুরাতন নুসখা। এক খন্ডের শেষে ৩ পৃষ্ঠা কম। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা হল ৬৪৮।
দ্বিতীয় নুসখাটি মাকতাবায়ে ফাইজুল্লাহ আফিন্দীতে সংরক্ষিত।সেখানে পরিস্কার ভাষায় লিখিত আছে “আলজামেউল মুখতাসার মিনাস সুনান আন রাসূলিল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়ামারিফাতুস সাহীহ ওয়ালমালুল ওয়ামা আলাইহিল আমল”।
উভয় নুসখাতেই সনদ রয়েছে। যা ইমাম তিরমিজী পর্যন্ত পৌঁছে।
বিস্তারিত জানতে পড়ুন শায়েখ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ কৃত “তাহকীকু ইসমিস সাহীহ ওয়া ইসমিস জামেউত তিরমিজী”।