97 বার দেখা হয়েছে
"ইসলামের ইতিহাস" বিভাগে করেছেন

2 উত্তর

1 টি পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর
ইলমে কালামের সূচনা সম্পর্কে আবুল হাছান আশআরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি হতে শুরু করে আল্লামা তাফতাযানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পর্যন্ত সকলেই এক বাক্যে এটা বলেছেন যে, হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবীগণের যুগ পর্যন্ত লোকেরা আকাইদ সংক্রান্ত ব্যাপারে সরাসরি রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট হতে জেনে নেয়ার কিংবা প্রত্যক্ষভাবে সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করার সুযোগ পাওয়ার দরুন নিশ্চিন্ত হতেন এবং খুব কমই মতানৈক্য প্রকাশ পেত। কিন্তু পরবর্তীকালে ফিতনা এবং অরাজকতা দেখা দিলে সন্দেহ ও আপত্তির সৃষ্টি হয়। এটার কিছু রাজনৈতিক কারণ ছিল, কিন্তু অধিকাংশ মতানৈক্য ও মতভেদ এমন ছিল যা ভিন্ন ধর্মের লোক কিংবা তাদের মধ্য হাতে ইসলাম গ্রহণকারী লোক অথবা গ্রীক জ্ঞানসমূহের প্রচার এবং তার প্রভাবাধীন যুক্তিগত পদ্ধতির প্রাধান্যের কারণে সৃষ্টি হয়। কিন্তু এটা মনে করা ঠিক নয় মতানৈক্যের সৃষ্টি কোন অসাধারণ বা অস্বাভাবিক অবস্থা ছিল অথবা এটা কেবল মুসলমানদের ব্যাপারেই ঘটেছিল। প্রথমত, এটা এক স্বভাবজাত ব্যাপার যে, মানুষ সময়ে সময়ে তার বাক্তিগত চিন্তা প্রয়োগ করে থাকে এবং প্রতিটি বস্তুর ব্যাপারে তার নিজস্ব দৃষ্টিভংগীও ধার্য করে থাকে। সে এক চিন্তার উপর বিদ্যমান থাকতে পারে না। রাজনৈতিক অবস্থা, ভৌগলিক অবস্থান এবং বিভিন্ন জাতির আদর্শিক দ্বন্দের শিকার হওয়ার পর চিন্তাধারায় আলোড়ন সৃষ্টি হওয়া অবশ্যম্ভাবী। দ্বিতীয়তঃ ইসলাম হল সমগ্র মানবজাতির দ্বীন বা ধর্ম। এটা পৃথিবীর সকল মত ও পথের মোকাবিলায় নিজস্ব ধ্যান-ধারণা ও কর্মপদ্ধতি পেশ করে। যার দরুন একটি সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। তখন মাযহাব এবং দ্বীনের অনুসারীরা এটার মোকাবিলায় সংঘবদ্ধ হয় এবং নিজেদের চিন্তাধারার অনুকূলে ও তার প্রতিরোধকল্পে সব রকমের অস্ত্র প্রয়োগ করে, যার ফলে অনেক সময় নতুন ইসলাম গ্রহণকারীগণও প্রভাবিত হয়ে পড়ে। মতবিরোধ প্রতিটি ধর্মে এবং প্রতিটি দর্শনে বিদ্যমান। তদ্রূপ প্রাকৃতিক নিয়মের অধীনে মুসলমানদের মধ্যেও মতপার্থক্য দেখা যায় ।

ইসলামী চিন্তাবিদগণ এ ধরনের মতবিরোধ এবং বিতর্কের মোকাবিলা কিভাবে, করেছেন এবং এত দ্বন্দ্ব ও কলহের মধ্যেও কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তির উপর উম্মতের ঐক্য কিরূপে সুদৃঢ় রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। আলিমগণ প্রকৃত পক্ষে মৌলিক বিষয়গুলিতে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে মূল লক্ষ্যে স্থির রয়েছেন ও উম্মতকে সঠিক নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। এই একতাবদ্ধ রাখার কাজ ইলমে কালাম সম্পন্ন করেছে। যেমন বর্ণিত হয়েছে, এই মোকাবিলার তিনটি ক্ষেত্র ছিলঃ- 

১. অভ্যন্তরীণ, যাতে মুসলমানদের ভিতরে উদ্ভূত সন্দেহের অবসান করা হয়েছে। এটা ছিল বিভিন্ন মতবাদের ভিতরগত ব্যাপার।
২. ভিন্ন ধর্মীয় মতবাদের অনুপ্রবেশের ফলে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব বিশেষভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে।
এটা ছিল বিভিন্ন ধর্মীয় মতবাদের তুলনামূলক বিচারের ক্ষেত্র।
৩. গ্রীক চিন্তাধারা ও বিশ্বাসের মোকাবিলা । এটাকে যুক্তিগত ক্ষেত্র বলা যেতে পারে।

যদিও অনেকের ক্ষেত্রে ইলমে কালাম নতুন বিপর্যয়ের কারণও হয়েছে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে ইলমে কালাম সত্য দ্বীনের বাস্তবতা প্রমাণ করার এবং এটার বিরুদ্ধে পরিচালিত আক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদান রেখেছে।

ইলমে কালাম কেবল মুসলমানগণই সৃষ্টি করেছে। কার্যত ইলমে কালামে সেই সকল উপকরণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অন্তর্ভুক্ত হতে থাকে যা দ্বীনী এ'তেকাদ (বিশ্বাস) সমূহ প্রমাণের জন্য আবশ্যক ছিল। যেমন সৃষ্টির শুরু এবং বিশ্ব জগতের সৃষ্টি সংক্রান্ত ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় যুক্তিনির্ভর প্রমাণ সমূহকে যথারীতি একটি পদ্ধতিতে এই শাস্ত্রে বর্ণনা করা হয় এবং পরবর্তী আলিমগণ দর্শন ও তাসাউফের সাথে ইলমে কালামের আলোচ্য বিষয়গুলির সমন্বয় সাধন করতে প্রয়াস পান। তবে দর্শন ও তাসাউফের স্বকীয়তা আলাদ আলাদাভাবে বজায় থাকে এবং মৌলিক দ্বীনী দৃষ্টিভংগীর উপরই প্রতিষ্ঠিত থাকে। 
0 জনের পছন্দ 0 জনের অপছন্দ
করেছেন

ইলমে কালাম বা কালাম শাস্ত্রের সূচনা হয়েছিল ইসলামের প্রথম শতাব্দীতে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে মুসলমানগণ কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত ইসলামের আকীদা সংক্রান্ত বিষয়গুলো মেনে নিয়েছিলেন। তাই তারা কুরআন ও হাদীস ব্যতীত অন্য কোন জ্ঞান চর্চার প্রতি দৃষ্টিপাত করেননি। কারণ এ ব্যাপারে তাদের ঈমান ছিল সহজ ও সরল অথচ খুবই দৃঢ় ও মজবুত। তাদের ঈমান ও বিশ্বাসের ব্যাপারে কোন জটিলতা ছিল না।

তবে দ্বিতীয় শতাব্দীতে ইসলামের বিস্তারের ফলে বিভিন্ন ধর্ম ও মতাদর্শের সাথে মুসলমানদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এই সংঘর্ষে মুসলমানদের ইসলামী আকীদা সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন যুক্তি ও দর্শন প্রয়োজন হয়। এই প্রয়োজনীয়তা থেকেই ইলমে কালামের সূচনা হয়।

ইলমে কালামের প্রথমদিকের মুতাকাল্লিমগণ ছিলেন মূলত দার্শনিক। তারা ইসলামী আকীদাকে যুক্তি ও দর্শনের মাধ্যমে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন। এই সময়ের উল্লেখযোগ্য মুতাকাল্লিমদের মধ্যে রয়েছেন:

  • ইমাম গাজালি (১০৫৮-১১১১)
  • ইমাম রাযী (৮৬৫-৯২৫)
  • ইমাম ইবনে খালদুন (১৩৩২-১৪০৬)

ইলমে কালামের ক্রমবিকাশের সাথে সাথে এর বিষয়বস্তুও বিস্তৃত হয়। কালাম শাস্ত্রে বর্তমানে ইসলামী আকীদা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে:

  • আল্লাহর অস্তিত্ব ও গুণাবলী
  • নবী-রাসূলের নবুওয়াত
  • কুরআন ও হাদীসের অভ্রান্ততা
  • আখিরাত ও পরকালীন জীবন

ইলমে কালাম ইসলামী আকীদা সংরক্ষণ ও প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এটি মুসলমানদেরকে তাদের বিশ্বাসের উপর দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকতে সাহায্য করেছে।

এরকম আরও কিছু প্রশ্ন

2 টি উত্তর
5 নভেম্বর, 2023 "মাদ্রাসা" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Muaz_Hajare
1 টি উত্তর
2 টি উত্তর
3 টি উত্তর
6 এপ্রিল, 2021 "পদার্থবিদ্যা" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Md.Suny
2 টি উত্তর
2 টি উত্তর
5 নভেম্বর, 2023 "মাদ্রাসা" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন Muaz_Hajare
1 টি উত্তর
14 সেপ্টেম্বর, 2023 "কুরআন ও হাদিস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন M.S.C_Safwana
1 টি উত্তর
24 নভেম্বর, 2021 "কুরআন ও হাদিস" বিভাগে প্রশ্ন করেছেন অজ্ঞাতকুলশীল
2 টি উত্তর

34,054 টি প্রশ্ন

33,008 টি উত্তর

1,578 টি মন্তব্য

3,213 জন সদস্য

Ask Answers সাইটে আপনাকে সুস্বাগতম! এখানে আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন এবং অন্যদের প্রশ্নে উত্তর প্রদান করতে পারবেন ৷ আর অনলাইনে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার কাজে অবদান রাখতে পারবেন ৷
23 জন অনলাইনে আছেন
0 জন সদস্য, 23 জন অতিথি
আজকে ভিজিট : 20739
গতকাল ভিজিট : 36222
সর্বমোট ভিজিট : 42793980
  1. MuntasirMahmud

    302 পয়েন্ট

    60 টি উত্তর

    2 টি গ্রশ্ন

  2. Limon54

    105 পয়েন্ট

    20 টি উত্তর

    5 টি গ্রশ্ন

  3. Kuddus

    85 পয়েন্ট

    17 টি উত্তর

    0 টি গ্রশ্ন

  4. TeddyAhsan

    71 পয়েন্ট

    4 টি উত্তর

    1 টি গ্রশ্ন

  5. Sijan855

    69 পয়েন্ট

    1 টি উত্তর

    14 টি গ্রশ্ন

এখানে প্রকাশিত সকল প্রশ্ন ও উত্তরের দায়ভার কেবল সংশ্লিষ্ট প্রশ্নকর্তা ও উত্তর দানকারীর৷ কোন প্রকার আইনি সমস্যা Ask Answers কর্তৃপক্ষ বহন করবে না৷
আজ বঙ্গাব্দ৷
...